সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল সাড়ে ৮টায় উপজেলার পেরুল উত্তর ইউনিয়নের আলীশ্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে কোনো ভোটার নেই। এমন পরিস্থিতি ছিল সকাল ৯টা ১০ মিনিট পর্যন্ত। ৯টা ১১ মিনিটে অবশেষে মিলল ভোটারের দেখা। ভোট দিতে এলেন কয়েকজন নারী ভোটার। ভাগ্য রানী দাস নামের এক নারী প্রথম ভোট দেন।
৪০ মিনিট পর প্রথম ভোট দেওয়ার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ইব্রাহিম খলিল জানান, এই কেন্দ্রে ভোটারসংখ্যা দুই হাজার ১৩১ জন। কেন্দ্রটি নারী ভোটার কেন্দ্র। ভোটারদের উপস্থিতি একেবারেই কম। যারা আসছেন, তারা নির্বিঘ্নে ভোট দিচ্ছেন।
ওই কেন্দ্রের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে থাকা এসআই মো. শাহজাদা বলেন, ভোটাররা যেন সুন্দর পরিবেশে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন, সে জন্য সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। কেউ অনিয়মের চেষ্টা করলে আমরা কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেব।
রিটার্নিং কর্মকর্তার দপ্তরে খোঁজ নিয়ে এবং স্থানীয় ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, লালমাই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এবার চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোহাম্মদ কামরুল হাসান ওরফে শাহীন। তিনি কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা যুবলীগের আহ্বায়কের পদে রয়েছেন। শাহীনের চাচা সরকারের অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, তার বাবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হামিদ এবং আরেক চাচা গোলাম সরওয়ার পাশের কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান। এ নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য অধ্যক্ষ মো. আবদুল মমিন মজুমদার (আনারস প্রতীক)।
ভোটাররা বলছেন, মূল লড়াইটা হবে এই দুই প্রার্থীর মধ্যেই। তবে আরেক বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য (কাপ-পিরিচ) মো. হারুনর রশীদ মজুমদারও নিজেকে মাঠের শক্ত প্রার্থী দাবি করেছেন। এ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে চার প্রার্থী মাঠে রয়েছেন।
লালমাই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মোট ভোটারসংখ্যা এক লাখ ৫৭ হাজার ২১৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৭৯ হাজার ৫৭৪ জন। আর নারী ৭৭ হাজার ৬৪৩ জন।
নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলার জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠানের জন্য আমাদের সব প্রস্তুতি রয়েছে। কাউকে অনিয়মের সুযোগ দেওয়া হবে না। কেউ ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা করলে আমরা কঠোর ব্যবস্থা নেব। এরই মধ্যে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ চলছে।