পাট ও পাটের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নিয়ে প্রতিবছর প্রতিবেদন প্রকাশ করে থাকে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)। প্রতিষ্ঠানটির সর্বশেষ স্ট্যাটিস্টিক্যাল বুলেটিনের তথ্য বলছে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ভারতের পাটের উৎপাদন ছিল ১৬ লাখ ৫৬ হাজার টন আর বাংলাদেশের ছিল ১৫ লাখ ৪৯ হাজার টন। কিন্তু গত চার অর্থবছরে ভারতের পাট উৎপাদন ধারাবাহিকভাবেই কমছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে ভারতে পাটের উৎপাদন ৯ লাখ ৮০ হাজার টন। অন্যদিকে বাংলাদেশের উৎপাদন কমেছে প্রায় ৯ শতাংশ। ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশের উৎপাদন ছিল ১৪ লাখ আট হাজার টন। এর মাধ্যমে ভারতকে টপকে শীর্ষ পাট উৎপাদনকারী এখন বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিজেআরআই) পরিচালক (কৃষি) কৃষিবিদ নার্গীস আক্তার বলেন, ‘গত কয়েক বছরের গবেষণালব্ধ জাত ও প্রযুক্তিগুলো মাঠ পর্যায়ে সম্প্রসারণ করা গেলে পাটের আবাদ আরো বাড়ানো সম্ভব। আমরা ১০০ দিনে কাটার উপযোগী জাত উন্নয়নে কাজ করছি। এরই মধ্যে পাটের জীবনকাল ১১০ দিনে নামিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। লবণাক্ত অঞ্চলের জন্য লবণ সহিষ্ণু, চরাঞ্চলের জন্য জলমগ্ন সহিষ্ণু, হাওর ও পাহাড়ি অঞ্চলের জন্য জাত উন্নয়ন করা হয়েছে। শিগগিরই এসব জাত মাঠ পর্যায়ে সম্প্রসারণের মাধ্যমে অপ্রচলিত এলাকায় পাটের আবাদ বাড়ানো সম্ভব হবে। পাটের বহুমুখী ব্যবহার বিশেষ করে সবজি ও চা-পাতার জন্য জাত উন্নয়ন করা হয়েছে।’
জানা গেছে, প্রাকৃতিক তন্তু হিসেবে সোনালি আঁশের উজ্জ্বল সম্ভাবনা তুলে ধরতে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় অন্যান্য বছরের মতো এবারও ৬ মার্চ ‘জাতীয় পাট দিবস ২০২৩’ উদযাপন করছে। এবারের জাতীয় পাট দিবসের প্রতিপাদ্য ‘পাটশিল্পের অবদান, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ’। পাট খাতে অবদান রাখার জন্য এ বছর পাট দিবসে ১১টি ক্যাটাগরিতে ১১ জন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া পাট সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সাতটি শুভেচ্ছা স্মারক দেওয়া করা হবে। দেশের প্রতিটি বিভাগীয় শহরের পাশাপাশি কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত এবং পাটসমৃদ্ধ ফরিদপুর জেলায় পাট ও পাটজাতপণ্য প্রদর্শনী ও মেলার আয়োজন করা হয়েছে। এ ছাড়া ১২ থেকে ১৬ মার্চ শিল্পকলা একাডেমিতে পাঁচ দিনব্যাপী বহুমুখী পাটপণ্য প্রদর্শনী ও মেলার আয়োজন করা হচ্ছে।