ঢাকাশনিবার, ২৮শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

জমি নিয়ে বিরোধ-সংঘর্ষ হলে থানা পুলিশকে জানাবেন না

নিউজ ডেস্ক | সিটিজি পোস্ট
ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৩ ১১:৩০ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

কক্সবাজারের রামু উপজেলার অন্তর্গত জমি নিয়ে বিরোধ-সংঘর্ষ হলে রামু থানা পুলিশকে জানাবেন না এমন বিষ্ফোরক মন্তব্য করেছেন উপজেলাধীন  রামু থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ারুল হোসাইন। এ সময় সাংবাদিক ও সংবাদ নিয়েও বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য রাখেন।
গত বৃহস্পতিবার  উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মিটিং এ একথা বলেন তিনি।আইনশৃঙ্খলা কমিটির মিটিং এ এমন নেতিবাচক মন্তব্যের পর মিটিং এ উপস্থিতিদের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। এদিকে ওসির অপসারণ চেয়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে।
জানা গেছে, গত ৯ ফেব্রুয়ারি যুগান্তর অনলাইন ও প্রিন্টে “পারিবারিক পিকনিক থেকে ৪ নারীকে থানায় নিয়ে যৌন হেনস্তার অভিযোগ” শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশের উদ্ধৃতি দিয়ে ওসি এমন মন্তব্য করেন।এদিকে রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ারুল হোসাইনের এমন বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রামু প্রেস ক্লাবের সদস্যরা। আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় উপস্থিত সাংবাদিক শওকত ইসলাম, নুরুল হক সিকদার ও কফিল উদ্দিন বলেন, একজন দায়িত্বশীল পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে রামু থানার ওসি আনোয়ারুল হোসাইন কখনো এ ধরণের বক্তব্য দিতে পারেন না। আর সাংবাদিকরা নিজেদের ইচ্ছেমতো সংবাদ লিখেন না, ভুক্তভোগীদের বক্তব্য আর অভিযুক্তদের বক্তব্য হুবুহু তুলে ধরেন। একজন ওসির এরকম অপরিপক্ক বক্তব্য অপরাধ-সহিংসতাকে আরো বেশি উসকে দিবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় উপস্থিত দুই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বলেন, ওসি আনোয়ারুল হোসাইন মন্তব্যটি অনেকটা ক্ষোভের বশিভূত হয়ে উপস্থাপন করেছেন। তিনি মিটিংয়ে তার নিজের মোবাইল থেকে যুগান্তরে প্রকাশিত জমি নিয়ে বিরোধ-সংঘর্ষ একটি সংবাদের উদ্ধৃতি দেন। তিনি ঐসময় বলেন জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ  ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের সর্বাত্মক চেষ্টা করে। কিন্তু  সাংবাদিকরা এসব ভূমি সংক্রান্ত ঘটনায় উল্টো পুলিশের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করে। সেই জায়গা থেকে হয়তো অভিমানের সুরে এরকম অনাকাঙ্কিত মন্তব্য করতে পারেন ওসি।
এদিকে একটি থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত ওসি আইনগতভাবে এমন বক্তব্য দিতে পারেন কিনা এমন প্রশ্নে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মহিউদ্দিন বলেন, সংঘাত-সংঘর্ষ যে বিষয় নিয়েই হোক না কেনো এধরণের আমলযোগ্য অপরাধকে নিবৃত্ত করা থানা পুলিশের আইনগত দায়িত্ব। একজন ওসির কাছে আমলযোগ্য অপরাধের সংবাদ আসলেই সাথে সাথে তার ব্যবস্থা নেওয়ার কথা আইনে আছে।
উল্লেখ্য যে রামুতে ওসি আনোয়ারুল হোছাইন যোগদানের পর থেকে রামুর আইশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। অস্বাভাবিকভাবে জমি বিরোধ-সংঘর্ষ, বিচারহীনতা, হয়রানী, অপররণ, চুরি, ডাকাতি, হত্যা, গরু চোরাচালান, কিশোর গ্যাং সহ নানান কার্যকলাপে সামাজিক অবক্ষয় হয়েছে।
জানতে চাইলে রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহমিদা মুস্তফা জানান,থানা পুলিশের প্রতি বিরূপ সংবাদের দুঃখ থেকেই ওসির এই বক্তব্য হয়তো তাছাড়া ওসি বক্তব্যে আরও সংযত হতে পারতেন বলে জানান।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ারুল হোসাইন বলেন, জমি নিয়ে বিরোধ-সংঘর্ষ হলে উল্টো পুলিশের বিরুদ্ধে নিউজ হয়। জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে পুলিশ কখনো হস্তক্ষেপ করবে না, তবে আইনশৃঙ্খলার অবনতি  হলে পুলিশ যাবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ভুক্তভোগী জানান,জমি নিয়ে আদালতে ডিগ্রি পাওয়ার পরও আসামীদের জমিতে না যাওয়ার বারণ করেছেন। আমার ৬০বছরের দখলে থাকা জমি আমার পিতা জায়গা ক্রয় করে পিতার নামে বিএস রেকর্ড থাকায় আমরা ভোগদখলে আছি। কিন্তু আদালতের নিষেধ না মেনে আমাকে ও আমার আম্মাকে মারধর করে রামু থানায় অভিযোগ করেও কোন আইনি সহায়তা পায়নি পুলিশের কাছে।রামু থানা মামলাও নিচ্ছে  না উক্ত ভুক্তভোগীর।