ঢাকাশনিবার, ২৮শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

দাড়ি-টুপির বিরুদ্ধে বলিনি : মেনন

নিউজ ডেস্ক | সিটিজি পোস্ট
ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৩ ৮:০৭ অপরাহ্ণ
Link Copied!

দাড়ি-টুপির প্রসঙ্গ তুলে হেফাজতে ইসলামের ক্ষমা চাওয়ার দাবি নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। তিনি বলেছেন, ‘আমি কখনোই দাড়ি-টুপির বিরুদ্ধে বলিনি। আমার বাবারও দাড়ি ছিল, টুপি পরতেন। আমিও মাঝেমধ্যে টুপি পরে থাকি। তারা (হেফাজত) এটাকে ইস্যু করে আমাদের শিক্ষা-সংস্কৃতিকে ধ্বংস করতে চায়। অবশ্য হেফাজত যখন আমার বিরুদ্ধে যায়, তখন বুঝি আমি বেহেস্তের পথে আরো এক ধাপ অগ্রসর হলাম।’

আজ বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘স্বাধীন জনগণতান্ত্রিক পূর্ব বাংলা কর্মসূচিতে কৃষি প্রশ্ন ও বাংলাদেশের বর্তমান বাস্তবতা’ শীর্ষক আলোচনাসভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সুবর্ণ জয়ন্তীর বছরব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে আয়োজিত সভায় মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন জাতীয় কৃষক সমিতির সভাপতি মাহমুদুল হাসান মানিক। আলোচনায় অংশ নেন এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা ও পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য কামরুল আহসান।

গত ১৯ ফেব্রুয়ারি জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এমএল) আয়োজিত এক আলোচনাসভায় রাশেদ খান মেনন বলেন, যারা রাজাকার-আলবদরদের টুপির নিচে নিয়ে গণতন্ত্রের লড়াই করে, তারা আমাদের বন্ধু হতে পারে না, বরং শত্রু। তাদের সর্বক্ষেত্রে বর্জন করতে হবে। ওই বক্তব্যবের নিন্দা জানায় হেফাজতে ইসলাম। দলের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে রাশেদ খান মেননকে বক্তব্য প্রত্যাহার ও ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানানো হয়।

আলোচনাসভায় শিক্ষা ক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িকীকরণের অভিযোগ উত্থাপন করেন সাবেক মন্ত্রী মেনন। তিনি বলেন, তরুণরা এগিয়ে না এলে বাংলাদেশের অবস্থা আফগানিস্তানের চেয়েও খারাপ হবে। আফগানিস্তানের নারীরা এখন স্কুলে যেতে পারছে না। অথচ খোদ সৌদি আরবে নারীরা এখন গাড়ি চালাচ্ছে, খেলাধুলা করছে। ইরানে হিজাবের বিরুদ্ধে লড়াই চলছে। তাই অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে এবং লড়াই জোরদার করতে হবে।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিসহ সার্বিক পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে সংসদ সদস্য মেনন বলেন, ‘আমাদের উচ্চাভিলাষী বড় বাজেট ফেল করায় ডলার সংকট এসেছে। এরপর আইএমএফের ঋণের অযৌক্তিক শর্ত মেনে নেওয়ায় বর্তমান দুর্বিষহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আইএমএফের শর্তেও কারণে মাত্র ১৭ দিনে দুইবার বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বেড়েছে। কৃষকের ভর্তুকি কমাতে হচ্ছে। এতে সারের দাম সেচের পানির দাম বেড়ে যাবে। ফলে সব ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। কিন্তু কৃষি ও কৃষককে বাদ দিয়ে এই পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটনানো অসম্ভব। করোনাকালে সেটা আমরা আরো বেশি অনুভব করেছি।’

রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘স্বাধীনতার প্রশ্নে কৃষক শ্রমিকের অংশগ্রহণ এবং এতে তাদের জীবনমানের কী পরিবর্তন এসেছে, তা আমাদের মনে রাখতে হবে। ১৯৭০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পল্টন ময়দানে স্বাধীন জনগণতান্ত্রিক পূর্ব বাংলা ঘোষণা দিবসের কর্মসূচিতে কৃষকের প্রশ্নে, কৃষির প্রশ্নে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করা হয়। কিন্তু আজ স্বাধীনতার ইতিহাস একমুখী এককেন্দ্রিক হয়ে গেছে। কিন্তু এমন একদিন আসবে, যেদিন সত্য ইতিহাস আবারও উদঘাটিত হবে।’