ঢাকাশনিবার, ৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

এক লাখ টাকা বাড়তে পারে হজের খরচ; প্যাকেজ ঘোষণা আজ

নিউজ ডেস্ক | সিটিজি পোস্ট
ফেব্রুয়ারি ১, ২০২৩ ১:১৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

হজ পালনে সরকারি-বেসরকারি সব প্যাকেজে এবার এক লাখ টাকা খরচ বাড়তে পারে। সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ গমনেচ্ছুদের প্যাকেজের বিষয়ে আজ বুধবার ঘোষণা আসতে পারে বলে জানা গেছে। এরই মধ্যে হজযাত্রীদের বিমানভাড়া ৭০ হাজার টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস, গত বছর যা এক লাখ ৪০ হাজার টাকা ছিল।

ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, শুধু বিমান ভাড়াই নয় টাকার সঙ্গে রিয়ালের মূল্যবৃদ্ধির কারণে হজের খরচ গত বছরের তুলনায় কিছুটা বাড়বে। সংকট দেখা দিতে পারে ডলার নিয়েও। করোনার কারণে গত বছর হজযাত্রীর সংখ্যা কম ছিল। এবার হজযাত্রীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় বাসাভাড়াও বাড়বে। ফলে সরকারি-বেসরকারি হজ প্যাকেজের খরচ ৯০ হাজার এক লাখ ২০ হাজার টাকা বাড়তে পারে। এ ছাড়া সৌদি আরবের মোয়াল্লেম (যিনি হজের সময় প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন) ফি ও অতিরিক্ত সার্ভিস চার্জ এখনো জানা যায়নি। সৌদি সরকার তাদের খরচ না জানালে নির্বাহী কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে হজের এ খরচ চূড়ান্ত করা হবে। কারণ, গত বছর মোয়াল্লেম ফি ও অতিরিক্ত সার্ভিস চার্জ বেড়ে যাওয়ায় প্যাকেজ ঘোষণার পর হজের খরচ আরো ৫৬ হাজার টাকা বাড়িয়েছিল সরকার। সৌদি সরকার তাদের মোয়াল্লেম ফি ও অতিরিক্ত সার্ভিস চার্জ নির্ধারণের ওপর পরবর্তী সময়ে হজের খরচ আরো বাড়তে পারে।

সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ গমনেচ্ছুদের প্যাকেজ ঘোষণা করা হতে পারে আজ বুধবার। এ জন্য হজ প্যাকেজ ২০২৩ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের লক্ষ্যে আজ সচিবালয়ে হজ ব্যবস্থাপনাসংক্রান্ত নির্বাহী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হবে। আগে মন্ত্রিসভার বৈঠকে হজ প্যাকেজ অনুমোদন দেওয়া হলেও গত বছর থেকে হজ ব্যবস্থাপনা নির্বাহী কমিটির সভায় অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে।

ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান গতকাল রাতে বলেন, হজ ব্যবস্থাপনা নির্বাহী কমিটির সভায় হজ প্যাকেজ নিয়ে আলোচনা করা হবে। বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর তা সাংবাদিকদের জানানো হবে। বিমানভাড়া ও সৌদি সরকারের খরচের বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি বলেন, হজের প্যাকেজ অবশ্যই বাড়বে। কারণ, টাকার সঙ্গে রিয়ালের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে অনেক।

হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম বলেন, সরকারি প্যাকেজের ওপর ভিত্তি করে আলোচনার মাধ্যমে বেসরকারি প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়। সরকার যদি হজের খরচ বাড়ায়, তাহলে আমাদের করার কী আছে। তবে সহনীয় পর্যায়ে রাখা উচিত। কারণ এ দেশের অধিকাংশ হজযাত্রী নিম্ন-মধ্যবিত্ত।

তিনি বলেন, বিমানভাড়া বৃদ্ধির যে প্রস্তাব দিয়েছে তা অসহনীয়। হজযাত্রীদের সুবিধার্থে বিমানভাড়া সহনীয় পর্যায়ে নির্ধারণ করতে হবে।

সাত বছরের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, হজের ব্যয় বেড়েছে প্রতিবছরই। ২০২০ সালে সরকারের সর্বশেষ ঘোষিত হজ প্যাকেজ-১ ছিল চার লাখ ২৫ হাজার টাকার, প্যাকেজ-২ ছিল তিন লাখ ৬০ হাজার টাকার এবং প্যাকেজ-৩ ছিল তিন লাখ ১৫ হাজার টাকার। ২০১৯ সালের প্যাকেজ-১ ছিল চার লাখ ১৮ হাজার ৫০০ টাকার, ২০২০ সালে বাড়ানো হয় সাড়ে ছয় হাজার টাকার। ২০১৯ সালে প্যাকেজ-২ ছিল তিন লাখ ৪৪ হাজার টাকার, ২০২০ সালে বেড়েছে ১৬ হাজার টাকা। ২০১৮ সালে প্যাকেজ-১ ছিল তিন লাখ ৯৭ হাজার ৯২৯ টাকার, প্যাকেজ-২ তিন লাখ ১৯ হাজার ৩৫৫ টাকার। এর আগে ২০১৭ সালে প্যাকেজ-১ ছিল তিন লাখ ৮১ হাজার ৫০৮ টাকার, ২০১৬ সালে তিন লাখ ৬০ হাজার ২৮ টাকার এবং ২০১৫ সালে ছিল তিন লাখ ৫৪ হাজার ৭৪৫ টাকার।

এ ছাড়া ২০০৯ সালে বাংলাদেশের হজযাত্রীর কোটা ছিল ৫৮ হাজার ৬২৮ জন। ২০১৯ সালে তা এক লাখ ২৬ হাজার ৯২৩ জনে বৃদ্ধি পেয়েছিল। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে ২০২২ সালে অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশকে সীমিত পরিসরে ৬০ হাজার ১৪৬ জন হজযাত্রীর কোটা দেওয়া হয়েছিল। সার্বিক বিবেচনায় ২০০৯ সাল থেকে ২০২৩ পর্যন্ত হজযাত্রীর কোটা ১৪৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২৮ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। চলতি বছর হজ পালনে গত ৯ জানুয়ারি সৌদি আরবের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় হজচুক্তি করেছে বাংলাদেশ। হজচুক্তি অনুযায়ী এ বছর মোট এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজযাত্রী বাংলাদেশ থেকে হজে যেতে পারবেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ হাজার, বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এক লাখ ১২ হাজার ১৯৮ জন হজযাত্রী পবিত্র হজ পালন করতে পারবেন। ৬৫ বছরের বেশি বয়সিদের হজ করার ওপর নিষেধাজ্ঞাও উঠে গেছে।