শীতের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় শিশু ও বয়স্করা ঠান্ডাজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন বেশি। রাজধানীর শিশু হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, বহির্বিভাগে আগের চেয়ে দ্বিগুণ রোগী আসছে।
ডাক্তাররা বলছেন, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, জ্বর ও ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। ঝুঁকিতে আছে অ্যাজমায় আক্রান্ত শিশুরা।
সারাদেশে বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। এই সময়ে হাসপাতালগুলোতে বেড়েছে শীতজনিত রোগীর চাপ। সবচেয়ে বেশি রোগে ভুগছে শিশু ও বয়স্করা।
বাংলাদেশ শিশু হাসপাতালে প্রতিদিনই ঠান্ডাজনিত নানা উপসর্গ নিয়ে আসা শিশুদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। জানুয়ারির শুরু থেকেই বহির্বিভাগে দেখানো শিশু রোগীর সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। আর নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তির সংখ্যা বেড়েছে কমপক্ষে ২৫ শতাংশ।
সরকারি হাসপাতালগুলোর শিশু ওয়ার্ডে শয্যার চেয়ে রোগী বেশি হওয়ায় হাসপাতালের মেঝে ও বারান্দাতেও চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। এতে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত শিশুদের কষ্ট বেশি হচ্ছে।
যারা এসব হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন, তাদের বড় অংশ দরিদ্র। চিকিৎসকরা বলছেন, অভিভাবকদের সচেতনতার অভাবে শিশুরা দ্রুত ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
ঢাকার মিরপুরেও নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতেও ঠান্ডাজনিত সমস্যা নিয়ে আসা রোগীদের সংখ্যা বাড়ছে। সেখানে সরেজমিনেও দেখা গেছে, নবজাতক থেকে ছয় মাস বয়সী শিশুর সংখ্যা বেশি।
রাজধানীর বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে বর্তমানে যতো রোগী ভর্তি হচ্ছে এর বড় অংশ ঠান্ডাজনিত সমস্যা নিয়ে।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, জরুরি বিভাগের সামনে সাতটি শিশুকে নিয়ে স্বজনেরা অপেক্ষা করছেন।
শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের ডা. রিজওয়ানুল আহসান বলেন, শীত বেড়ে যাওয়ায় শিশুদের কাশি, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, জ্বর ও ভাইরাসজনিত কারণে ডায়রিয়া দেখা দিচ্ছে।
এখন শিশুদের পাশাপাশি বয়স্কদেরও প্রায় একই অবস্থা। শীতকাল লম্বা হবার কথা বলছেন আবহাওয়াবিদরা। তাই শিশু-বয়স্ক সকলকে বাড়তি সতর্ক থাকতে পরামর্শ চিকিৎসকদের।
মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ও স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক টিটো মিয়া বলেন, তাপমাত্রা হঠাৎ কমায় শিশুদের ঠান্ডাজনিত রোগ বাড়ছে।
নিউমোনিয়া, অ্যাজমার পাশাপাশি ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো সমস্যা হচ্ছে। শীত থেকে যতটা সম্ভব নিরাপদে থাকতে হবে। গরম কাপড় ব্যবহার ও শিশুদের বাইরে যতটা কম নেওয়া যায়, তত ভালো। ঠান্ডার সমস্যা দেখা দেওয়া মাত্র চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।