গাজীপুরের শ্রীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে একটি সিংহীরও মৃত্যু হয়েছে বলে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সহকারী বন সংরক্ষক এসিএফ মো. রফিকুল ইসলাম। কিন্তু সিংহী মৃত্যুর খবরটি গণমাধ্যমে প্রকাশ করেনি সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষ।
সিংহীটি হঠাৎ করে হার্ট অ্যাটাকে মারা গেছে বলে সাধারণ ডায়েরিতে (জিডিতে) উল্লেখ্য করা হয়েছে। অপরদিকে সচেতন মহল বলছে, পার্কের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের গাফিলতির জন্য আবারও একে একে প্রাণী মারা যাচ্ছে।
গত ১৬ ডিসেম্বর শুক্রবার সাফারি পার্কের সিংহী বেষ্টনীতে সিংহীটির মৃত্যু হয়েছিল কিন্তু অজ্ঞাত কারণে এই তথ্যটি গোপন রাখা হয়েছিল। তবে কেন গোপন রাখা হয়েছিল জানা যায়নি। সিংহী মৃত্যুর বিষয়ে গত ১৭ ডিসেম্বর সকালে শ্রীপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সহকারী বনসংরক্ষক এসিএফ মো. রফিকুল ইসলাম।
থানায় সাধারণ ডায়েরি সূত্রে জানা যায়, মৃত সিংহটি মাদি ছিল। আনুমানিক বয়স ১৪ বছর।
গাজীপুর জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (কালিয়াকৈর সার্কেল) আজমীর হোসাইন বলেন, হঠাৎ করে আবারও প্রাণী মৃত্যুর বিষয়ে শ্রীপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি হচ্ছে। সম্প্রতি একটি হাতি ও একটি সিংহ মৃত্যু জিডি হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সহকারী বন সংরক্ষক এসিএফ মো. রফিকুল ইসলামে মুঠোফোন অর্ধশতাধিক ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের প্রকল্প পরিচালক মো. ইমরান হাসান জানান সিংহী মৃত্যুর বিষয়টি আমাকে জানানো হয়েছে। মৃত্যুর কারণ নির্ণয় করতে ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে হার্ট অ্যাটাকে সিংহীর মৃত্যু হয়েছে। এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট হাতে পেলে প্রকৃত কারণ জানা যাবে। কোনো ধরনের অবহেলার প্রমাণ পেলে এ বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের প্রধান মঞ্জরুল কিবরিয়া বলেন, আসলে প্রাণীগুলো মারা যাওয়ার পিছনে অনেক কারণ থাকে। যেমন তাদের সঠিক পরিচর্যা, খাদ্য বাসস্থান এ সকল বিষয়ের উপর যথেষ্ট গুরুত্ব দিতে হবে। এগুলো যেকোনো একটির সমস্যা থাকলে প্রাণী মৃত্যু হতে পারে। হঠাৎ করে প্রাণী মৃত্যু খারাপ সংবাদ। প্রতিবছর একই সময়ে ধারাবাহিক প্রাণীর মৃত্যু খুবই দুঃখজনক। গত বছরের প্রাণী মৃত্যু আর এবছরের প্রাণী মৃত্যু সঙ্গে কি ধরনের মিল রয়েছে তা আমি সরেজমিনে গিয়ে বুঝতে পারবো। সব মিলিয়ে প্রাণীগুলোর সঠিক পরিচর্যা না পেলে বা অবহেলা থাকলে মৃত্যু হতে পারে।
গত ২০২২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে ১১টি জ্রেবা একটি বাঘ মারা যায়। এরপর দায়িত্ব অবহেলার কারণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সহকারী বন সংরক্ষক এসিএফ তবিবুর রহমানসহ চারজনকে বরখাস্ত করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়। যা বর্তমানে সিআইডিতে তদন্তনাধীন রয়েছে। আবার গত ২১ ডিসেম্বর একটি হাতির মৃত্যু হয়।