ঢাকাবুধবার, ২৫শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

অস্থিরতায় রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড

নিউজ ডেস্ক | সিটিজি পোস্ট
জানুয়ারি ৩, ২০২৩ ১০:৪৯ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান এবং তাঁর বিরোধী আরেকটি পক্ষ দ্বন্দ্বে লিপ্ত। পরিস্থিতি এতটা জটিল হয়েছে যে বোর্ড সভায় সদস্যরা উপস্থিত হচ্ছেন না। বোর্ড সূত্র মতে, সম্প্রতি রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের গুরুত্বপূর্ণ ফাইল বাইরে পাচারের অভিযোগ তুলে তৎকালীন সচিব মোয়াজ্জেম হোসেনের সঙ্গে কয়েকজন কর্মকর্তার হাতাহাতি ঘটে। এ নিয়ে করা মামলা চলমান।

এরই মধ্যে শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনকে দেওয়া ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্যসংবলিত একটি চিঠি ভাইরাল হয়। যদিও ওই চিঠি চেয়ারম্যান দেননি বলে অস্বীকার করেন।

এদিকে শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শকের পদটি শূন্য হলে রাজশাহী মহিলা কলেজের শিক্ষক শামসুজ্জোহাকে সে পদে পদায়ন করা হয়; কিন্তু কয়েক দিন পরে সেই চিঠিটি আবারও প্রত্যাহার করে নেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। দায়িত্ব পাওয়ার পরে শামসুজ্জোহা চেয়ারে বসতে গেলেও চেয়ারম্যানের বাধায় সেটি সম্ভব হয়নি। এর কয়েক দিন পর শামসুজ্জোহাকে সে পদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের একটি সূত্র জানায়, বোর্ডে বর্তমানে দুটি পক্ষ বিরাজমান। বর্তমান চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান যোগদানের পর থেকে তাঁকে একটি পক্ষ তেমনভাবে সহযোগিতা করছে না বলে অভিযোগ উঠতে থাকে। কলেজ পরিদর্শক থাকাকালীন হাবিবুর রহমানের সঙ্গে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটি অংশের দ্বন্দ্ব বিরাজমান। এর নেপথ্যে রয়েছে চেয়ারম্যানের কয়েকটি বিতর্কিত সিদ্ধান্ত।

বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক পদটি শূন্য হলে চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি সচিব হুমায়ন কবিরকে দায়িত্ব দেওয়া হয় সেই পদে। এর পরে গত সেপ্টেম্বরে ওই পদে রাজশাহী মহিলা কলেজের শিক্ষক শামসুজ্জোহাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়; কিন্তু হাবিবুর রহমান তাঁকে সেই পদে বসতে দেননি। এর কয়েক দিন পরেই শামসুজ্জোহাকে সেই দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এরপর গত ১৩ অক্টোবর চেয়ারম্যান একটি চিঠি ইস্যু করে ওই পদটিতে অতিরিক্ত দায়িত্ব গ্রহণ করেন। বোর্ডের চেয়ারম্যান, সচিব এবং পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের পরেই কলেজ পরিদর্শকের পদটি ধরা হয়। চেয়ারম্যান দুই ধাপ নিচে নেমে গিয়ে কলেজ পরিদর্শকের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন এখন।

শিক্ষা বোর্ড সূত্র মতে, এরই মধ্যে গত ১০ ডিসেম্বর চেয়ারম্যান শিক্ষা বোর্ডের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত পাস করতে বোর্ড সভা ডাকেন; কিন্তু ১১ সদস্যের এ কমিটির দুজন সদস্য সেদিন সশরীরে বোর্ড সভায় উপস্থিত ছিলেন। আর চিঠিতে অনলাইনে বোর্ড সভায় উপস্থিত হওয়ার কোনো কথা না থাকলেও আরো দুজনকে অনলাইনে যুক্ত করে সভা করেন চেয়ারম্যান। তার পরও ১১ সদস্যের মধ্যে চেয়ারম্যানকে দিয়ে দুজন অনলাইনে ধরে পাঁচজন উপস্থিত হন। এই সভাটিও চেয়ারম্যান করতে পারেননি কোন্দলের কারণে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘শিক্ষা বোর্ডের বিভিন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সচিব হুমায়ন কবিরের সঙ্গে চেয়ারম্যানের দূরত্ব অনেক। ফলে শিক্ষা বোর্ডে এখন চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে। কোনো কাজই ঠিকমতো করতে পারছেন না কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ’ তবে বিষয়টি নিয়ে ফোন করা হলে সচিব হুমায়ন কবির মন্তব্য করতে রাজি হননি।

রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বলেন, ‘শুরু থেকেই একটি পক্ষ আমাকে নানাভাবে অসহযোগিতা করে আসছে। সে কারণেই বোর্ডের কাজে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তবে আমি চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার। ’ কলেজ পরিদর্শকের দায়িত্ব গ্রহণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পরিদর্শকের পদে দায়িত্ব নেওয়া বোর্ডের প্রবিধান মতেই হয়েছে। কোনো নিয়মের ব্যত্যয় হয়নি। ’