ঢাকাবৃহস্পতিবার, ২৮শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

কারাবন্দী নেতাদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ করা হচ্ছে: বিএনপি

নিউজ ডেস্ক | সিটিজি পোস্ট
ডিসেম্বর ২৩, ২০২২ ৩:০০ অপরাহ্ণ
Link Copied!

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ কারাবন্দী জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে দলটি। বিএনপি বলছে, কারাবন্দী নেতাদের প্রায় ২৪ ঘণ্টা তালাবদ্ধ করে রাখা হচ্ছে। তাঁদের মানসিক নির্যাতনে রাখা হচ্ছে। এটা মানবাধিকার ও সংবিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করে দলটি। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ।

বিএনপির দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক এমরান সালেহ বলেন, দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালামসহ শীর্ষ নেতারা দীর্ঘদিন ধরে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসের মতো বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে দেশে-বিদেশে চিকিৎসা নিয়েছেন। গায়েবি মামলায় বয়োজ্যেষ্ঠ এই নেতাদের কারাবন্দী করায় তাঁদের চিকিৎসায় ব্যাঘাত ঘটছে। কারাগারে তাঁরা সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন তাঁদের স্বজনেরা।

সৈয়দ এমরান সালেহ বলেন, কারাবিধি অনুযায়ী অনেক নেতা ডিভিশন পাওয়ার অধিকারী। কিন্তু অনেককে এখনো ডিভিশন দেওয়া হয়নি। কারাবন্দী নেতাদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ করা হচ্ছে। তাঁদের জামিন পাওয়ার অধিকার রয়েছে। কিন্তু বারবার তাঁদের জামিন নামঞ্জুর করা হচ্ছে। তাঁরা গুরুতর অসুস্থ। তাঁরা বয়োজ্যেষ্ঠ। তা সত্ত্বেও সরকারের নির্দেশে তাঁদের জামিন দেওয়া হচ্ছে না।

বিএনপির নেতাদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন এমরান সালেহ। তিনি বলেন, কারাগারে বিএনপির নেতাদের সঙ্গে যে অমানবিক আচরণ করা হচ্ছে, তা অতীতে দেখা যায়নি। কারাবিধি অনুযায়ী, তাঁদের সেলের তালা দিনের বেলা খুলে দেওয়ার কথা। কিন্তু প্রায় ২৪ ঘণ্টা তাঁদের তালাবদ্ধ অবস্থায় রাখা হচ্ছে। ভেতরে তাঁদের মানসিক নির্যাতনে রাখা হচ্ছে বলে আত্মীয়-স্বজনদের মাধ্যমে তাঁরা জানতে পারছেন।

এমরান সালেহ বলেন, বিএনপির নেতাদের আত্মীয়-স্বজনেরা যখন কারাগারে দেখা করতে যান, কল দেন, তখন দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না। এগুলো কারাবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। একই সঙ্গে মানবাধিকার ও সংবিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসের জামিন আবেদন সবশেষ গত বুধবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে নামঞ্জুর হয়। এর আগে তিনবার দুজনের জামিন আবেদন নাকচ করেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম)।

৭ ডিসেম্বর রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে দলটির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এতে একজন নিহত ও অর্ধশত আহত হন। সংঘর্ষের পর পুলিশ বিএনপির কার্যালয়ে অভিযান চালায়। ঘটনার পরদিন পল্টন, মতিঝিল, রমনা ও শাহজাহানপুর থানায় পৃথক চারটি মামলা করে পুলিশ। এতে ৭২৫ জনের নাম উল্লেখসহ ২ হাজার ৯৭৫ নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়। মামলায় মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসের নাম ছিল না।

মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসের বাসায় ৮ ডিসেম্বর গভীর রাতে পৃথক অভিযান চালায় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। দুজনকে প্রথমে আটক করে নিয়ে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়। বাসা থেকে নিয়ে যাওয়ার প্রায় ১১ ঘণ্টা পর মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসকে পল্টন থানার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে তাঁদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।