ঢাকাবুধবার, ২৭শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

চট্টগ্রামে জিপিএ–৫ বেশি পাওয়া প্রতিষ্ঠান

নিউজ ডেস্ক | সিটিজি পোস্ট
নভেম্বর ২৯, ২০২২ ১০:৪৯ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

২০১৫ সাল পর্যন্ত ৫টি মানদণ্ডের ভিত্তিতে সেরা প্রতিষ্ঠান নির্বাচনের নিয়ম থাকলেও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের কারণে এখন সেই নিয়ম বা সুযোগ কোনোটাই আর নেই। তাই বিগত বছরগুলোর ধারাবাহিকতায় এবছরও কোনো প্রতিষ্ঠানকেই সেরা প্রতিষ্ঠান বলা যাবে না। অবশ্য সেরা প্রতিষ্ঠান নির্বাচন না করলেও ৫টি মানদণ্ডের মধ্যে কেবল একটি মানদণ্ডের (জিপিএ–৫) ভিত্তিতে এগিয়ে থাকা বেশ কিছু সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের নামের তালিকা প্রকাশ করে থাকে শিক্ষাবোর্ড। তবে এই তালিকাকে কোনোভাবেই সেরা প্রতিষ্ঠানের তালিকা বলা যাবে না বলে জানিয়েছেন শিক্ষাবোর্ডের কর্মকর্তারা।

শিক্ষাবোর্ড কর্মকর্তারা বলছেন– ‘প্রতিষ্ঠানে নিবন্ধিত শিক্ষার্থীর সংখ্যার মধ্যে নিয়মিত পরীক্ষার্থীর শতকরা হার, মোট

পরীক্ষার্থীর শতকরা পাসের হার, জিপিএ–৫ প্রাপ্তির সংখ্যা, জিপিএ’র গড় এবং প্রতিষ্ঠানের মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা, অতীতে এই পাঁচ মানদণ্ডের ভিত্তিতে সেরা প্রতিষ্ঠান নির্ধারণ করা হতো। কিন্তু এখন আমরা কেবল একটি মানদণ্ড (জিপিএ–৫) বিচারে কিছু সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের তুলনামূলক চিত্র উপস্থাপন করি মাত্র। তাও তুলনার সুবিধার্থে। এটিকে কোনোভাবেই সেরা প্রতিষ্ঠানের তালিকা বলা যাবে না। কারণ, একটি মানদণ্ড দিয়ে কোনোভাবেই সেরা প্রতিষ্ঠান নির্ধারণ করা যাবে না।’ পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি হলে জিপিএ–৫ প্রাপ্তির সংখ্যাও স্বাভাবিকভাবে বেশি হবে। তাই এই একটি মাত্র মানদণ্ডের বিচারে কোনো প্রতিষ্ঠানকেই শীর্ষ বা সেরা প্রতিষ্ঠান বলা যাবে না।

এবার সংখ্যার বিচারে জিপিএ–৫ বেশি পাওয়া প্রতিষ্ঠান বাওয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ (বাংলাদেশ মহিলা সমিতি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজ)। প্রতিষ্ঠানটির এবার মোট ৬১০ পরীক্ষার্থীর শতভাগ পাস করেছে। জিপিএ–৫ পেয়েছে ৫০১ জন। গতবার প্রতিষ্ঠানটির ৪৫৫ পরীক্ষার্থীর মধ্যে শতভাগ পাসসহ জিপিএ–৫ পায় ৩২১ জন। এই সাফল্যে শিক্ষক–অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ জানিয়ে প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ মো. আরিফুল হাসান চৌধুরী বলেন, শিক্ষার্থীরা কষ্ট করে পড়া লেখা করে বলেই স্কুলের এ অর্জন। তবে, এই অর্জনে শিক্ষক ও অভিভাবকদের ভূমিকাও রয়েছে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই সাফল্যের ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন রাখতে চান তিনি।

ঐতিহ্যবাহী কলেজিয়েট স্কুলের ৪৮৩ জন শিক্ষার্থী এবার জিপিএ–৫ পেয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির ৪৯৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ৪৯৩ জন। গতবার ৪৬২ জন পরীক্ষার্থীর শতভাগ পাসসহ ৪৪৬ জন জিপিএ–৫ অর্জন করে। কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ফলাফলে আমরা খুশি। ফল ভাল করার পেছনে পাঠদানে শিক্ষকদের আন্তরিকতার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের কঠোর পরিশ্রম রয়েছে। মোট কথা এ ফল শিক্ষক–অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মিলিত প্রচেষ্টার ফসল। ভবিষ্যতে আরো এগিয়ে যাওয়ার আশা প্রকাশ করেন এই প্রধান শিক্ষক।

ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৪৬৬ জন শিক্ষার্থী এবার জিপিএ–৫ পেয়েছে। স্কুলটির এবার ৪৭৯ পরীক্ষার্থীর পাসের হার শতভাগ। গতবার স্কুলটির ৪৭৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে শতভাগ পাসসহ জিপিএ–৫ পায় ৪৫৯ জন। সরকারি মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ের এবার ৪৬৩ পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ৪৬২ জন। আর জিপিএ–৫ পেয়েছে ৪৪০ জন। গতবার স্কুলটির ৪০৩ জন পরীক্ষার্থীর শতভাগ পাসসহ ৩৬৩ জন শিক্ষার্থী জিপিএ–৫ পায়।

নাসিরাবাদ সরকারি (বালক) উচ্চ বিদ্যালয়ের এবার ৪২১ জন শিক্ষার্থী জিপিএ–৫ পেয়েছে। স্কুলটির ৪৭৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ৪৭২ জন। গতবার ৪৭০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৪৬৯ জন পাস করে। আর জিপিএ–৫ পায় ৩৯১ জন। ফলাফলে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে নাসিরাবাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অনুপম দাশ বলেন, ফলাফলে আমরা সন্তুষ্ট। তবে ভবিষ্যতে আরো ভালো করার চেষ্টা থাকবে।

বাকলিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ২৫১ জন শিক্ষার্থী এবার জিপিএ–৫ পেয়েছে। স্কুলটির ৩৪২ পরীক্ষার্থীর মধ্যে এবার পাস করেছে ৩৪১ জন। গতবার ৩৮৮ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করে ৩৮৬ জন। আর জিপিএ–৫ পায় ২৫৮ জন।

চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ২৪৪ জন শিক্ষার্থী এবার জিপিএ–৫ পেয়েছে। স্কুলটির ২৭৩ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২৭২ জন পাস করেছে এবার। গতবার প্রতিষ্ঠানটির ৩০৩ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৩০২ জন পাস করে। আর জিপিএ–৫ পায় ২৪৮ জন।

চট্টগ্রাম সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ২৪৬ জন পরীক্ষার্থীর শতভাগ পাস করেছে এবার। আর জিপিএ–৫ পেয়েছে ২২৫ জন। গতবার প্রতিষ্ঠানটির ২৪১ জন পরীক্ষার্থীর শতভাগ পাসসহ জিপিএ–৫ পায় ২১৩ জন। এছাড়া ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের ২০২ জন, সিটি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৭৭ জন এবং ইস্পাহানি পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের ১০৯ জন শিক্ষার্থী জিপিএ–৫ পেয়েছে এবার। ফল পর্যালোচনায় দেখা যায়, জিপিএ–৫ প্রাপ্তির সংখ্যায় এগিয়ে থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর অধিকাংশই মহানগরীর।