ঢাকাশনিবার, ৭ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

নির্বাচন এপ্রিলেই, বিএনপি অনড় ডিসেম্বরে — রাজনৈতিক অঙ্গনে ফের উত্তাপ

নিউজ ডেস্ক | সিটিজি পোস্ট
জুন ৭, ২০২৫ ১০:৫১ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

২০২৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী এপ্রিল মাসের প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হবে—এমন ঘোষণা দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। শুক্রবার (৬ জুন) সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এই ঘোষণা আসার পরপরই দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন ফের উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

ঘোষণার সঙ্গে তীব্র ভিন্নমত জানিয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) জানিয়েছে, তারা তাদের পুরনো অবস্থানে অনড়। দলটির দাবি, নির্বাচন চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই সম্পন্ন করতে হবে।

 

❝ডিসেম্বরেই নির্বাচন চাই—বিএনপি❞

প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণার পরই জরুরি বৈঠকে বসে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটি। তারেক রহমান লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।

বৈঠক শেষে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “জনগণের বিপুল আত্মত্যাগে অর্জিত বিজয় সত্ত্বেও নির্বাচন অনুষ্ঠান বিলম্বিত হওয়ায় মানুষ হতাশ ও ক্ষুব্ধ। রমজান, পরীক্ষা ও বৈরী আবহাওয়ার বাস্তবতা বিবেচনায় ডিসেম্বরেই নির্বাচন হওয়া জরুরি।”

 

বিএনপির অভিযোগ, অধ্যাপক ইউনূস তার ভাষণে নির্বাচন পেছানোর কোনো যৌক্তিক কারণ উপস্থাপন করেননি। বরং বর্ষাকাল ও রমজানের সময় ভোটগ্রহণের চিন্তা সংকট তৈরি করতে পারে। একই সঙ্গে ভাষণে বন্দর ও কোরিডর প্রসঙ্গ তোলা “রাজনৈতিক ভব্যতার সীমা লঙ্ঘন” বলেও উল্লেখ করা হয়।

প্রধান উপদেষ্টার প্রস্তাবকে ইতিবাচকভাবে দেখেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এবং জামায়াতে ইসলামী।

এনসিপি বলেছে, জুলাই সনদ ও সংস্কার বাস্তবায়নে কার্যকর উদ্যোগ নিলে এপ্রিলেই নির্বাচন হলে তারা আপত্তি করবে না।

জামায়াতে ইসলামী সন্তোষ প্রকাশ করে বলেছে, প্রধান উপদেষ্টার ভাষণ জাতিকে আশ্বস্ত করেছে এবং এটি গণতন্ত্রে ফেরার সুযোগ তৈরি করছে।

এপ্রিলের নির্বাচন নতুন দল এনসিপি এবং জামায়াতের জন্য লাভজনক হতে পারে। এনসিপি সময় পেয়ে নিজেদের সংগঠন গুছিয়ে নিতে পারবে।

জামায়াত তার বিতর্কিত অতীত থেকে বেরিয়ে নতুনভাবে গণভিত্তি প্রমাণের সুযোগ পাবে।

তবে, এই ঘোষণার ফলে জাতীয় ঐক্যের বদলে নতুন বিভাজনের শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

এখন বড় প্রশ্ন হলো, নির্বাচন পেছানোর সিদ্ধান্ত গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করবে, নাকি রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা আরও বাড়াবে?

সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ এখন অন্তর্বর্তী সরকারের সামনে— সব পক্ষকে নিয়ে একটি গ্রহণযোগ্য ও সুষ্ঠু নির্বাচন কীভাবে নিশ্চিত করা যায়, সেটি নিয়ে।