সরকার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্ত করে রাজস্ব প্রশাসনের নতুন কাঠামো গঠন করেছে। সোমবার (১২ মে) রাতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫’ অনুমোদন দেওয়ার পর থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়।
নতুন কাঠামো অনুযায়ী, রাজস্ব খাত এখন থেকে দুটি পৃথক বিভাগে পরিচালিত হবে—‘রাজস্ব নীতি বিভাগ’ এবং ‘রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ’। এর মধ্য দিয়ে দীর্ঘদিনের প্রতিষ্ঠান এনবিআরের অবসান ঘটেছে।
নতুন অধ্যাদেশ অনুযায়ী, রাজস্ব নীতি বিভাগ কর আইন প্রণয়ন, সংস্কার এবং বিশ্লেষণের কাজ করবে। রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ মাঠপর্যায়ে কর আদায় ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
তবে এই রূপান্তরের বিরুদ্ধে আপত্তি জানিয়েছেন কাস্টমস ও আয়কর ক্যাডারের কর্মকর্তারা। তাঁদের অভিযোগ, নতুন কাঠামোতে রাজস্ব প্রশাসনের স্বাধীনতা নিশ্চিত না হয়ে বরং প্রশাসন ক্যাডারকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। অনেক কর্মকর্তা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, এতে রাজস্ব প্রশাসনে দক্ষতা ও স্বচ্ছতা ব্যাহত হতে পারে।
কাস্টমস ও আয়কর ক্যাডারের কর্মকর্তা ও প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, তাঁরা অধ্যাদেশের খসড়া পর্যায় থেকেই প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন। তাদের ভাষ্য, সরকার তাঁদের মতামত আমলে না নিয়েই প্রায় অপরিবর্তিত খসড়ার ভিত্তিতে চূড়ান্ত অধ্যাদেশ জারি করেছে।
পরিস্থিতি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে এনবিআরের কর্মকর্তারা আজ (১৩ মে) বিক্ষোভের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। তাঁদের দাবি, রাজস্ব ক্যাডারের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতাকে উপেক্ষা করে এই রূপান্তর কার্যকর করা হয়েছে, যা দীর্ঘমেয়াদে রাজস্ব সংগ্রহের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।
এদিকে অর্থ মন্ত্রণালয় বা সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো ব্যাখ্যা বা বিবৃতি দেওয়া হয়নি।
এই অধ্যাদেশ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, সুষ্ঠু ও কার্যকর বাস্তবায়ন ছাড়া এই পরিবর্তন কাঙ্ক্ষিত ফল দেবে না।