ঢাকাসোমবার, ১২ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

কালুরঘাট সেতুর ভিত্তিপ্রস্তরে প্রধান উপদেষ্টার ব্যক্তিগত ইচ্ছায় তাঁর নাম না রাখার অনুরোধ

নিউজ ডেস্ক | সিটিজি পোস্ট
মে ১২, ২০২৫ ১২:১৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগামী ১৪ মে, বুধবার তার নিজ জেলা চট্টগ্রামে প্রথমবারের মতো সরকারপ্রধান হিসেবে সফর করবেন। এ সফরকে কেন্দ্র করে দিনব্যাপী বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি নির্ধারিত হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পঞ্চম সমাবর্তনে অংশগ্রহণ এবং কর্ণফুলী নদীর ওপর নির্মাণাধীন কালুরঘাট রেল কাম সড়ক সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর উন্মোচন।

প্রধান উপদেষ্টার ব্যস্ত এ সফরের সূচনা হবে চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি-৫ ইয়ার্ডে একটি মতবিনিময় সভার মধ্য দিয়ে, যেখানে তিনি বন্দর কর্তৃপক্ষ, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেবেন। এরপর তিনি চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে আসবেন, যেখানে দুটি গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি সম্পন্ন করবেন। এর মধ্যে অন্যতম হলো দক্ষিণ চট্টগ্রামের জনসাধারণের বহুল প্রতীক্ষিত কালুরঘাট রেল কাম সড়ক সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন, যা তিনি সার্কিট হাউস থেকেই ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করবেন। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, প্রধান উপদেষ্টার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তে এ প্রকল্পের উদ্বোধনী ফলকে তার নাম সংযোজন করা হয়নি। একইসঙ্গে, তিনি চট্টগ্রাম হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালের দলিল সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করবেন।

এরপর তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গমন করবেন, যেখানে অনুষ্ঠিত হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সমাবর্তন অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানে ২০১১ থেকে ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের প্রায় ২২,৬০০ জন শিক্ষার্থীকে সনদপত্র প্রদান করা হবে এবং ২০১৫ থেকে ২০২৫ সময়কালে পিএইচডি অর্জনকারী ২২ জনকে ডিগ্রি প্রদান করা হবে। সমাবর্তনে প্রধান বক্তা হিসেবে ভাষণ দেবেন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তার দারিদ্র্য বিমোচন এবং বিশ্বশান্তিতে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে সম্মানসূচক ডি লিট ডিগ্রি প্রদান করবে। অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক সিআর আবরার ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।

এই সফরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো কালুরঘাট নতুন রেল কাম সড়ক সেতু প্রকল্প, যার মোট ব্যয় ১১ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৭ হাজার ১২৫ কোটি টাকার অর্থায়ন করছে দক্ষিণ কোরিয়ার ইডিসিএফ ও ইডিপিএফ। অবশিষ্ট অর্থ দেবে বাংলাদেশ সরকার। সেতুটি হবে ৭০০ মিটার দীর্ঘ, এবং এতে থাকবে ৬.২০ কিমি ভায়াডাক্ট, ২.৪০ কিমি সড়ক ভায়াডাক্ট, ৪.৫৪ কিমি বাঁধ এবং ১১.৪৪ কিমি রেলপথ। প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্য ২০৩০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করা।

চট্টগ্রামবাসীর জন্য এ সফর কেবল একটি উন্নয়ন প্রকল্পের সূচনা নয়, বরং তাদের জন্মভূমির একজন গর্বিত সন্তানের প্রত্যাবর্তনের প্রতীকও। ড. ইউনূসের এই সফরকে ঘিরে নগরজুড়ে উচ্ছ্বাস, আশাবাদ এবং একটি উন্নয়নশীল ভবিষ্যতের প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠছে।