চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদ্যঘোষিত ৫৪ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটিতে আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট হিসেবে পরিচিত রাজীব জাফর চৌধুরীকে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করায় ত্যাগী ও প্রবীণ বিএনপি নেতাকর্মীদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে।
গতকাল (৬ মে) দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরে এই কমিটি ঘোষণা করা হয়। যেখানে রাজীব জাফরের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীদের একাংশ বলছেন, আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট, এমনকি অতীতে দলীয় বিরোধিতায় সক্রিয় ভূমিকা রাখা একজন ব্যক্তিকে কমিটিতে ঠাঁই দিয়ে বিএনপি নিজের আদর্শ ও ত্যাগী নেতাদের অবমূল্যায়ন করেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রবীণ বিএনপি নেতা বলেন, “যারা ১/১১ থেকে শুরু করে চলমান দমন-পীড়নের সময়েও দলের পতাকা হাতে রেখেছে, তাদের বাদ দিয়ে হঠাৎ করে এমন একজন ব্যক্তিকে গুরুত্বপূর্ণ কমিটিতে স্থান দেওয়া দুঃখজনক। এতে ত্যাগীদের মনোবল ভেঙে যাবে।”
অন্যদিকে, দক্ষিণ জেলার এক যুবদল নেতা সরাসরি অভিযোগ করে বলেন, “বহিরাগত ও আদর্শহীন লোককে কমিটিতে নিয়ে দলে অনুপ্রবেশকারীদের উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। আগামী নির্বাচনে বা আন্দোলনে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।”
তবে কমিটির এক আহ্বায়ক সদস্য নাম প্রকাশ না করে বলেন,”রাজীব জাফরের অতীত পরিচিতি থাকলেও তিনি দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত এবং স্থানীয়ভাবে জনপ্রিয়। তৃণমূলের একাংশের মতামত নিয়েই তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।”
রাজীব জাফরের বিষয়ে বিএনপির কেন্দ্র থেকে এখনও আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে দলীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে, এই নিয়ে দলের হাইকমান্ড পর্যায়েও কিছু প্রশ্ন উঠেছে, যা নিয়ে পরবর্তীতে পুনর্বিবেচনা হতে পারে।
উল্লেখ্য, গত বছর আলোচিত ‘এস আলম বিলাসবহুল গাড়ি কাণ্ডের’ জেরে আগের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। এরপর নতুন কমিটি গঠনে দীর্ঘসূত্রতা ও অভ্যন্তরীণ টানাপোড়েনের মধ্যেই রাজীব জাফরকে নিয়ে বিতর্ক আবারও দলীয় শৃঙ্খলা ও আদর্শের প্রশ্ন তুলেছে।