চট্টগ্রামের গৌরব ও ঐতিহ্যের অংশ হয়ে ওঠা আবদুল জব্বারের বলীখেলার ১১৬তম আসর বসছে আগামী ২৫ এপ্রিল (শুক্রবার)। ঐতিহাসিক লালদীঘি মাঠে বিকেল ৪টায় শুরু হবে বলীখেলার মূল প্রতিযোগিতা। একইসঙ্গে জমে উঠবে তিনদিনব্যাপী বৈশাখী মেলা, যা চলবে ২৪ থেকে ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত।
মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) মেলা ও খেলাকে ঘিরে নিরাপত্তা ও সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে আয়োজকদের সঙ্গে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় জানানো হয়, জনসাধারণের চলাচল নির্বিঘ্ন রাখতে আন্দরকিল্লা থেকে কোর্ট বিল্ডিং পর্যন্ত সড়কে কোনো দোকান বা স্টল বসানো যাবে না। স্টল বিক্রি, অবৈধ দখল ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে নেওয়া হবে কঠোর ব্যবস্থা।
সভার নেতৃত্বে ছিলেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি (দক্ষিণ) মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন। উপস্থিত ছিলেন এডিসি মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান মামুন, এসি কোতোয়ালী মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান, কোতোয়ালী থানার ওসি মোহাম্মদ আব্দুল করিম, বলীখেলা ও মেলা কমিটির নেতৃবৃন্দসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
প্রায় ১১৫ বছর আগে, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে ১৯০৯ সালের ১২ বৈশাখ বদরপাতির বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আবদুল জব্বার সওদাগর এ বলীখেলার সূচনা করেন। তার মূল উদ্দেশ্য ছিল উপমহাদেশের তরুণদের শারীরিকভাবে প্রস্তুত করা এবং ঔপনিবেশিক শক্তির বিরুদ্ধে সাহসী করে তোলা। সেই ঐতিহ্য আজও বহন করছে চট্টগ্রামবাসী।
বর্তমানে বলীখেলা শুধু কুস্তির প্রতিযোগিতা নয়, এটি চট্টগ্রামের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের শক্ত প্রতীক হিসেবে বিবেচিত। প্রতিবছর হাজারো দর্শক ভিড় করে লালদীঘি মাঠে এই খেলাধুলা ও উৎসবের আনন্দে শামিল হতে।
মেলা ও বলীখেলাকে কেন্দ্র করে শহরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। আয়োজকরা আশা করছেন, এই উৎসব চট্টগ্রামের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে নতুন প্রজন্মের মাঝে তুলে ধরবে আরও গৌরবের সঙ্গে।