চট্টগ্রামের হাজেরা-তজু ডিগ্রি কলেজে এইচএসসির নির্বাচনী পরীক্ষায় ইচ্ছাকৃতভাবে ফেল করিয়ে ৫১ শিক্ষার্থীকে ফরম পূরণ করতে না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আন্দোলনের জের ধরেই শিক্ষার্থীদের এভাবে টার্গেট করা হয়েছে বলে দাবি করেছে ভুক্তভোগীরা। এ নিয়ে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে কলেজ ও শিক্ষার্থী সমাজে।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তোলেন শিক্ষার্থীরা। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জাওয়াদুল আমিন। তিনি বলেন, কলেজের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে গত ৫ আগস্ট থেকে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করেন। আন্দোলনের মুখে কর্তৃপক্ষ কিছু দাবি মানলেও পরবর্তীতে প্রতিশোধ নিতে ৫১ জন শিক্ষার্থীকে মডেল টেস্টে ফেল করানো হয়।
জাওয়াদুল আমিন বলেন, “স্বৈরাচার সরকারের পতনের পর আমরা বেতন-ভর্তি ফি কমানো এবং দুর্নীতিবাজ শিক্ষকদের অপসারণের দাবিতে আন্দোলনে যাই। এরপর থেকেই আমাদের হয়রানি শুরু হয়। গভর্নিং বডির সভাপতি মুজিবুর রহমানের নির্দেশে মডেল টেস্টে ফেল করানো হয়।”
তার অভিযোগ, পরীক্ষার খাতা দেখানোর অনুরোধ করলেও কর্তৃপক্ষ তাতে সাড়া দেয়নি, বরং হেনস্তা করেছে। “আমাদের অভিভাবকদের ডেকে হুমকি দেওয়া হয়েছে, কেউ কেউ কলেজ ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন,” বলেন তিনি।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ফরম পূরণের সুযোগ না দিলে তারা ২০ এপ্রিল থেকে আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করবেন।
এ বিষয়ে জানতে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অহিদুল আলমের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক ড. পারভেজ সাজ্জাদ চৌধুরী জানান, “বিষয়টি কিছুটা শুনেছি। কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে আমরা তদন্ত করে দেখতে পারি শিক্ষার্থীদের ইচ্ছাকৃতভাবে ফেল করানো হয়েছে কিনা।”
এক বোর্ড কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “কলেজটির ব্যবস্থাপনা একটি রাজনৈতিক গোষ্ঠীর প্রভাবাধীন। আন্দোলনে জড়িত থাকার কারণে শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে শুনেছি। এত সংখ্যক শিক্ষার্থী ফেল করানো হলে সেটি কলেজের ব্যর্থতা।”
উল্লেখ্য, আগামী ২৬ জুন থেকে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।