চট্টগ্রাম নগরের চকবাজারের চট্টেশ্বরী মোড়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের মিছিলের ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে। মামলায় নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীসহ ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের ৭৬ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। পাশাপাশি, আরও ৪০ থেকে ৫০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকেও আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
বুধবার (২৬ মার্চ) রাত সাড়ে ১০টায় নগরের চকবাজার থানায় মামলাটি দায়ের করেন উপপরিদর্শক (এসআই) এনামুল হক। বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে ‘সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক তথ্য সম্প্রচার, রাষ্ট্রের ক্ষতিসাধন ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে অর্থায়ন’ করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, ১৫ নম্বর বাগমনিরাম ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর গিয়াস উদ্দিন, সরাইপাড়া ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মোরশেদ আক্তার চৌধুরী, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক সদস্য নওশাদ মাহমুদ চৌধুরী, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক সদস্য গিয়াস উদ্দিন সুজন, বাগমনিরাম ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আজিম, সাধারণ সম্পাদক মো. সাইফুল ইসলাম বাবু, কোতোয়ালী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফিরোজ আহাম্মদসহ আরও অনেকে।
উপপরিদর্শক এনামুল হক এজাহারে উল্লেখ করেন, গত ২৫ মার্চ সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে গোলপাহাড় মোড়ে অবস্থানকালে তিনি বেতার যন্ত্রের মাধ্যমে সংবাদ পান যে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা চট্টেশ্বরী মোড়ে লাঠিসোঁটা, ইট-পাটকেল নিয়ে সরকারবিরোধী স্লোগানসহ মিছিল করছে। এরপর পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে মিছিলকারীরা পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে ১০টি কাঠের লাঠি এবং ১৮টি ইটের টুকরা উদ্ধার করা হয়।
পরে বাকলিয়া থানার নতুন ব্রিজ এলাকায় অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করে যে, পলাতক আসামিরা এবং অজ্ঞাতনামা ৪০-৫০ জন ব্যক্তি রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য সহায়তা করেছে।
চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহেদুল কবির বলেন, “নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের মিছিলের ঘটনায় ৭৬ জনের নাম উল্লেখসহ ৪০-৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।”
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, ২৫ মার্চ সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে চট্টেশ্বরী মোড় এলাকায় একদল নেতা-কর্মী মিছিল বের করে। মিছিলটি কালিমন্দিরের পাশ দিয়ে এম এম আলী সড়কের দিকে অগ্রসর হয়। এ সময় তারা ‘শেখ হাসিনা আসবে, বাংলাদেশ হাসবে’, ‘স্বাধীনতার এই দিনে, মুজিব তোমায় মনে পড়ে’ ইত্যাদি স্লোগান দেয়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, মিছিলের অগ্রভাগে কয়েকটি মোটরসাইকেল ছিল এবং পেছনে ২৫-৩০ জনের একটি দল স্লোগান দিচ্ছিল।
এ ঘটনায় পুলিশ তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে এবং আটক ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।