বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংস্কার প্রস্তাবগুলো গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “বিভিন্ন খাতের সংস্কার প্রস্তাবগুলো এরই মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পৌঁছে গেছে। এগুলো গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে মতামত দেওয়ার জন্য আমি অনুরোধ করব, যাতে সবাইকে নিয়ে সামনের পথে এগোতে পারি।”
বুধবার রাজধানীর লেডিস ক্লাবে বিএনপি আয়োজিত এক ইফতার মাহফিলে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রাজনৈতিক নেতাদের সম্মানে বিএনপির পক্ষ থেকে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ইফতার মাহফিলে জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, গণঅধিকার পরিষদ, এবি পার্টি, এলডিপি, জাতীয় পার্টি (জাফর)সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক ঐক্যের ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, “আজকে আমরা অত্যন্ত কঠিন সময় অতিক্রম করছি। ফ্যাসিবাদমুক্ত পরিবেশ পেলেও এখনো গণতন্ত্রের দিশা খুঁজে পাচ্ছি না। এ মুহূর্তে ঐক্য অত্যন্ত প্রয়োজন।”
তিনি আরও বলেন, “বিভিন্ন খাতের সংস্কার প্রস্তাবগুলো এরই মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পৌঁছে গেছে। এগুলো গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে মতামত দেওয়ার জন্য আমি অনুরোধ করব, যাতে সবাইকে নিয়ে সামনের পথে এগোতে পারি।”
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের বলেন, “আজকে বাংলাদেশ একটা পরীক্ষার মধ্যে অগ্রসর হচ্ছে। ৫ আগস্টে আমরা একটি বিশাল সফলতা পেয়েছিলাম। তার মূল ছিল সব শ্রেণির মানুষের ঐক্য। আমরা সবাই প্রতিটি বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। আমি মনে করি, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে একটি সুন্দর সমৃদ্ধ রাষ্ট্র গড়ার জন্য এখনো জাতীয় ঐক্যই হবে সবচেয়ে শক্তিশালী হাতিয়ার।”
তিনি জাতীয় ঐক্যের জন্য চারটি পয়েন্ট উল্লেখ করেন:
১. বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, যেখানে কোনো আপস হবে না।
২. একটি টেকসই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা।
৩. একটি সুষ্ঠু ও ন্যায্য নির্বাচন।
৪. দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়া।
ইফতার মাহফিলে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) প্রেসিডেন্ট কর্নেল (অব.) অলি আহমদ, জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর প্রমুখ বক্তব্য দেন।
বিএনপির নেতাদের মধ্যে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা বুলু, আবদুল আউয়াল মিন্টু, নিতাই রায় চৌধুরী, শামসুজ্জামান দুদু, আসাদুজ্জামান রিপন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানিসহ দলটির অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
মির্জা ফখরুলের এই বক্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার সূত্রপাত করেছে। বিশেষ করে সংস্কার প্রস্তাব ও জাতীয় ঐক্য নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলোচনা বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।