ঢাকাবুধবার, ১৯শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

কুখ্যাত আরসা নেতা আতাউল্লাহ নারায়ণগঞ্জ থেকে গ্রেফতার

নিউজ ডেস্ক | সিটিজি পোস্ট
মার্চ ১৮, ২০২৫ ৮:১৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে গভীর রাতে র‍্যাবের এক গোপন অভিযানে ধরা পড়ল মিয়ানমারের সশস্ত্র সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) কুখ্যাত প্রধান আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনী। দেশের অভ্যন্তরে দীর্ঘদিন ধরে লুকিয়ে থাকা এই সন্ত্রাসী নেতা তার সহযোগীদের নিয়ে বাংলাদেশে নাশকতার ছক কষছিল বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে তথ্য ছিল। অভিযান চালিয়ে তাকে ও আরও পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়।

সোমবার ভোররাতে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার এই অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। সিদ্ধিরগঞ্জের ভূমিপল্লী আবাসিক এলাকার একটি বহুতল ভবনে গোপন বৈঠক চলছিল। পরিকল্পনা ছিল, বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় নাশকতা চালানো হবে। কিন্তু র‍্যাবের দক্ষ গোয়েন্দা তৎপরতায় সেই ষড়যন্ত্রের আগেই ধরা পড়ে আতাউল্লাহ ও তার সহযোগীরা। অভিযানস্থল থেকে উদ্ধার করা হয় ২১ লাখ ৩৯ হাজার ১০০ টাকা, যা সন্দেহ করা হচ্ছে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য ব্যবহৃত হতো।

গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে আতাউল্লাহ ছাড়াও রয়েছেন তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী মোস্তাক আহমেদ, সলিমুল্লাহ, মো. আসমতউল্লাহ, হাসান এবং স্থানীয়ভাবে সহায়তাকারী মনিরুজ্জামান। তাদের বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় পৃথক দুটি মামলা করা হয়েছে, যেখানে প্রত্যেকের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড ও নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগ আনা হয়েছে। আদালতে তাদের ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হলে, পাঁচদিন করে মোট ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।

র‍্যাবের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, আতাউল্লাহ দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে আত্মগোপনে ছিল এবং তার সংগঠনের সদস্যদের বিভিন্ন জায়গায় পুনর্বিন্যাস করছিল। বিশেষ করে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবস্থানরত সদস্যদের সঙ্গে তার নিয়মিত যোগাযোগ ছিল এবং বিভিন্ন জায়গায় সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অর্থায়ন করছিল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সন্দেহ করছে, তার নেতৃত্বে একটি বৃহৎ নাশকতা চালানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছিল, যা সফল হলে দেশের নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াত।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই গ্রেফতার কেবল একটি ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযান নয়, বরং এটি দেশের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা রক্ষার লড়াইয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। বাংলাদেশ সরকার বহুদিন ধরেই যেকোনো ধরনের সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে কঠোর অবস্থানে রয়েছে, এবং এই অভিযান তারই আরেকটি প্রমাণ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিশ্চিত করেছে, যারা দেশের নিরাপত্তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করবে, তারা কেউই আইনের হাত থেকে রেহাই পাবে না।