রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় ইসকনের সাবেক নেতা ও বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন আবেদন বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের মহানগর দায়রা জজ সাইফুল ইসলাম নামঞ্জুর করেছেন। তবে বিশেষ নজরকাড়া ব্যাপার হলো—চিন্ময় বাবাজিকে আদালতে হাজির করানো হয়নি। ভার্চুয়াল হাজিরায় জামিন শুনানি হয়, যা দেখে কেউ কেউ বলছেন, “চিন্ময় শুধু চিন্ময় নন, তিনি ভার্চুয়াল গুরু!”
চিন্ময়ের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের ১১ জন আইনজীবীর একটি শক্তিশালী দল। নেতৃত্বে ছিলেন অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য। তাদের যুক্তি শুনে মনে হচ্ছিল, চিন্ময় কোনো আন্তর্জাতিক শান্তি পুরস্কারের মনোনীত প্রার্থী। কিন্তু আদালত সেই যুক্তি গ্রাহ্য করেনি।
মামলার পেছনের কাহিনি আরো নাটকীয়। গত ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামে চিন্ময়ের নেতৃত্বে সনাতনী সম্প্রদায়ের সমাবেশ হয়, যার পর ৩১ অক্টোবর জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করা হয়। চিন্ময়সহ মোট ১৯ জনকে এই মামলার আসামি করা হয়।
চিন্ময়ের গ্রেপ্তারও কোনো সাধারণ ঘটনা নয়। গত ২৫ নভেম্বর ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি হয়তো দেশত্যাগের চেষ্টা করছিলেন। তবে তার ভক্তরা বলছেন, “বাবা কৃষ্ণের তীর্থযাত্রায় যাচ্ছিলেন, পুলিশ ভুল বুঝেছে।”
গ্রেপ্তারের দিনই চিন্ময়ের অনুসারীরা চট্টগ্রামে এক নজিরবিহীন কাণ্ড ঘটায়। আদালত চত্বরে সংঘর্ষ, ককটেল বিস্ফোরণ, এবং আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে কুপিয়ে হত্যা—এ যেন পুরো মহাভারতের নতুন অধ্যায়।
এ ঘটনায় শুধু হত্যামামলাই হয়নি, পুলিশের কাজে বাধা দেওয়া, বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা, এবং বিস্ফোরণ নিয়ে পাঁচটি মামলা হয়েছে। স্থানীয়দের মতে, চিন্ময়ের এই লীলাখেলা দেখে বোঝা যাচ্ছে, তিনি শুধু ধর্মীয় নেতা নন, তিনি একটি “মোবাইল কোর্ট-ত্রাস”!
আদালত চত্বরে এমন নাটকীয়তার পরেও জামিন পেতে না পারা বুঝিয়ে দেয় যে চিন্ময় বাবাজির ভাগ্য এখন কৃষ্ণের হাতে নয়, বরং বিচারকের হাতেই।