৫৯ কোটি ৩৯ লাখ টাকা আত্মসাতের মামলায় ধারা মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের মালিক ও সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) জালাল উদ্দিন আহমেদকে ১২ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে রায়ে আসামিকে ৬০ কোটি টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৮ এর বিচারক মো. বদরুল আলম ভুইঞার আদালত এ রায় দেন। রায়ে অন্য আসামি ধারা মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের ম্যানেজার ও খুলনার পাইকগাছা উপজেলার সনাতনকাঠি গ্রামের বাসিন্দা শেখ সামসুর রহমানের ছয় বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রায়ের বিষয়ে দুদকের প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর বলেন, মামলায় দুদকের পক্ষে আমরা ৩৭ জনের সাক্ষ্য দিয়েছিলাম। আসামিরা শুরু থেকেই পলাতক ছিলেন। আজ তাদের অনুপস্থিতিই রায় ঘোষণা করেছেন আদালত।
২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর মেজর জেনারেল (অব.) জালাল উদ্দিন আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে বনানী থানায় বাদী হয়ে মামলা করেন দুদকের উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম।
মামলায় ধারা মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের সভাপতি জালাল উদ্দিন আহমেদ, তার স্ত্রী ও সোসাইটির সহসভাপতি আলেয়া ফাতেমা, ছেলে ও সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক তালহা আহমেদ এবং মেয়ে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাদিয়া আহমেদকে আসামি করা হয়। কিন্তু তদন্তে জালাল উদ্দিন আহমেদের স্ত্রী ও সন্তানদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়। আর তদন্তের মাধ্যমে শেখ সামসুর রহমানকে চার্জশিটভুক্ত করা হয়। পরে আদালত জালাল উদ্দিনের স্ত্রী ও সন্তানদের অব্যাহতি দিয়ে মামলার বিচার শুরু করেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, সেনাবাহিনী থেকে ২০০৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর অবসরে যান জালাল উদ্দিন আহমেদ। পরে তিনি ও তার স্ত্রী আলেয়া ফাতেমা ধারা মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড নামে সমবায় ব্যবসা শুরু করেন। এ সময় তিনি গ্রাহকদের আশ্বাস দেন, মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের অনুকূলে এফডিআরের মাধ্যমে টাকা রাখলে কেউ কখনো ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না।
তিনি এক হাজার ৪৪৯ বিনিয়োগকারীর মোট ৫৯ কোটি ৩৯ লাখ ১ হাজার ৪৫৪ টাকা ওই মাল্টিপারপাসের নামে রশিদের মাধ্যমে জমা নেন। কিন্তু ওই সোসাইটির ব্যাংক হিসাবে কোনো অর্থ জমা না দিয়ে তিনি প্রতারণামূলকভাবে তা আত্মসাৎ করেন। পরে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ছেলে ও মেয়ের কাছে ওই অর্থপাচার করেন।
আরএম/আরএইচ