রাঙামাটিতে এবার স্বল্প পরিসরে পালিত হবে প্রবারণা পূর্ণিমা। উড়ানো হবে না ফানুস। আর কঠিন চীবর দানোৎসবের মূল আয়োজন ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চীবর (ভিক্ষুদের পরিধেয় কাপড়) তৈরির আনুষ্ঠানিকতাও পালন করা হবে না।
জেলা পুলিশের আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় এমনটাই জানিয়েছেন রাঙামাটির বিভিন্ন বৌদ্ধধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও বিহার পরিচালনা কমিটির প্রতিনিধিরা। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তার নিশ্চয়তা ও সব বিহারে সিসিটিভির আওতায় নিয়ে আসার দাবি তোলা হয়েছে ।
আজ (১৪ অক্টোবর) দুপুরে জেলা পুলিশের আয়োজনে রাঙামাটিতে প্রবারণা পূর্ণিমা ও অন্যান্য বৌদ্ধ ধর্মীয় উৎসব উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে বৌদ্ধধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও বিহার পরিচালনা কমিটির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। জেলা পুলিশের আয়োজনে সভায় সভাপতিত্ব করেন পুলিশ সুপার ড. এসএম ফরহাদ হোসেন।
সভায় পুলিশ সুপার ড. এসএম ফরহাদ হোসেন বলেন, প্রবারণা পূর্ণিমা ও কঠিন চীবর দান উদযাপনে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেয়া হবে। মূল আনুষ্ঠানিকতা না করলেও চীবরদান করবেন বলে জানিয়েছে ভিক্ষু ও বিহার পরিচালনা কমিটির প্রতিনিধিরা। প্রবারণায় ফানুস উড়াতে চাচ্ছেন না। আমরা বলবো স্বাভাবিক জীবনযাত্রা চলুক। এইযাত্রা থেকে যদি আমরা ফিরে আসি, সেটা কারো জন্যই ইতিবাচক নয়। সিসিটিভি না থাকায় প্রকৃত অপরাধীদের ধরতে খুবই সমস্যা হয়। সবখানে, সব বিহার সিসিটিভির আওতায় নিয়ে আসার দাবি দাবি জানাচ্ছি।
সভায় বক্তব্য রাখেন রাজবন বিহার পরিচালনা কমিটির সহসভাপতি নিরূপা দেওয়ান, বনরূপা মৈত্রী বিহারের সাধারণ সম্পাদক পূর্ণ চন্দ্র দেওয়ান, জেলা বিএনপির সভাপতি দীপন তালুকদার দীপু, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মামুনুর রশীদ মামুন, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি মনছুর আলম প্রমূখ।
বক্তারা জানান, সম্প্রতি খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে পাহাড়ি বাঙালি সহিংসতা হয়েছে। এর জেরে পার্বত্য চট্টগ্রামে ‘বিদ্যমান পরিস্থিতি ও নিরাপত্তাহীনতা’র অভিযোগ তুলেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্মিলিত ভিক্ষু সংঘ। ৬ অক্টোবর রাঙামাটি মৈত্রী বিহারে সংবাদ সম্মেলন করে পার্বত্য তিন জেলায় এবার কঠিন চীবর দান উদযাপন না করার ঘোষণা দেন তারা।
এ অবস্থায় এবার কঠিন চীবর দান পালন না হলে ভক্তদের মনে আঘাত আসবে। একই সাথে দেশে ও বহির্বিশ্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং দেশ সম্পর্কে ভুল বার্তা যাবে। তাই বিষয়টি বিবেচনায় নেয়া দরকার।
পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মারুফ আহমেদ, শাহনেওয়াজ রাজু, সাইফুল ইসলামসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।