নিরাপত্তাজনিত কারণে তিন পার্বত্য জেলায় কঠিন চীবর দান উদযাপন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বৌদ্ধ ধর্মের গুরুরা। কঠিন চীবর দান বৌদ্ধদের অন্যতম প্রধান দান উৎসব। রোববার দুপুরে রাঙামাটি বনরূপা মৈত্রী বিহারে এক সংবাদ সম্মেলনে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্মিলিত ভিক্ষু সংঘ। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পার্বত্য ভিক্ষু সংঘের সভাপতি ভদন্ত শ্রদ্ধালংকার মহাথের। সংবাদ সম্মেলনে তিন পার্বত্য জেলার ১৫ টি বৌদ্ধ ভিক্ষু সংঘের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সভাপতি ভদন্ত শ্রদ্ধালংকার মহাথের বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামের বিদ্যমান পরিস্থিতি ও নিরাপত্তাহীনতার কারণে এ বছর পার্বত্য চট্টগ্রাম (রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান) বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের কঠিন চীবর দান উদযাপন না করার ঘোষনা দিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্মিলিত ভিক্ষু সংঘ।’ লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, গত ১৮ ও ২০ সেপ্টেম্বর এবং ১ অক্টোবর খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় শতাধিক দোকানপাট ভাংঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। একই সাথে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলি তিন জন আদিবাসী তিনজন ব্যক্তি নিহত হন। হামলায় বিভিন্ন মন্দির, বুদ্ধমূর্তি ভাংঙচুর ও দানবাক্স লুট করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে ভদন্ত শ্রদ্ধালংকার মহাথের আরো জানান, আইন-শৃংখলা বাহিনীর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতায় এমন সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এ যাবতকালে যত সাম্প্রদায়িক হামলা হয়েছে তার কোন বিচার হয়নি। নামে মাত্র তদন্ত কমিটি করা হয় যা আলোর মুখ দেখে না। প্রশাসনের প্রতি কোন আস্থা না থাকার পাশাপাশি বৌদ্ধ সমাজ ও ভিক্ষুসংঘ উদ্বিগ্ন ও শঙ্কিত। এমন নিরাপত্তাহীনতা ও অনিশ্চয়তার কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল বিহারে কঠিন চীবর দান না করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। প্রবারণা পুর্ণিমার পরদিন থেকে পরবর্তী এক মাস বৌদ্ধ বিহারগুলোতে এ চীবর দান অনুষ্ঠিত হয়। পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রায় ২ হাজার অধিক বৌদ্ধ বিহার রয়েছে। চীবর দান উৎসব বৌদ্ধদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় সরকারিভাবে এ উৎসবে অনুদান প্রদান করা হয়ে থাকে।