‘বাংলার সৌরভ’ জাহাজে অগ্নিকাণ্ড ‘নাশকতা’ হতে পারে বলে সন্দেহ করছেন বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) এমডি কমডোর মাহমুদুল মালেক। তিনি বলেন, ‘বাংলার সৌরভ জাহাজের সম্মুখ অংশ থেকে একই সঙ্গে চার জায়গায় আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। অথচ জাহাজে কোনো বিস্ফোরণ হয়নি।’
শনিবার (৫ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিএসসি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এমনটি জানান তিনি।
বিএসসির এমডি বলেন, ‘জাহাজে অগ্নিকাণ্ডের সময় সমুদ্র খুব উত্তাল ছিল। বাতাসের গতিবেগ বেশি থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা কষ্টকর হয়ে পড়েছিল। অল্প সময়ের মধ্যে নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড এবং চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাতটি টাগবোট একযোগে অপারেশন পরিচালনা করে। প্রায় দেড় ঘণ্টায় অগ্নি নির্বাপন করার পরে বাতাসের কারণে সামনের দিকের ভেতর থেকে আবার আগুন জ্বলে ওঠে।’
‘পর পর এ ধরনের দুটি ঘটনা হুমকিস্বরূপ’
‘জাতীয় জ্বালানির জন্য ব্যাক টু ব্যাক (পর পর) এ ধরনের দুটি ঘটনা হুমকিস্বরূপ’ বলে সংবাদ সম্মেলনে মন্তব্য করেছেন শিপিং করপোরেশনের এমডি কমডোর মাহমুদুল মালেক।
তিনি বলেন, ‘বাংলার সৌরভ জাহাজে তেল ছিল ১১ হাজার ৫৫ টন। জাহাজে সর্বমোট জনবল ছিল ৪৮ জন। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর কিছু ক্রু অন্য বোটে এবং কেউ পানিতে ঝাঁপ দেয়। সবাইকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়। শুধু একজন স্টুয়ার্ড ছিলেন বয়স্ক। উনার নাম ছাদেক মিয়া। উনার বাড়ি নোয়াখালী, বয়স ঊনষাট বছর। তীরে পৌঁছানোর পরও উনার সেন্স ছিল। ট্রমাজনিত কারণে হাসপাতালে নেয়ার পথে বা হাসপাতালে নেয়ার পর তিনি মারা যান। যাদের রেসকিউ করা হয়েছে, তাদের কেউ তেমন আহত হয়নি ‘
শুক্রবার (৪ অক্টোবর) দিবাগত রাত ১২টা ৫০ মিনিটে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত এলাকায় মধ্যসাগরে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের ‘বাংলার সৌরভ’ জাহাজে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। পুরো প্রায় চার ঘণ্টা ধরে নৌ-বাহিনী, কোস্ট গার্ড ও বন্দর কর্তৃপক্ষের যৌথ চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এ সময় ৪৭ জন ক্রুকে জীবিত উদ্ধার করেছে নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ডের উদ্ধারকারী দল। এছাড়া সমুদ্রে ঝাঁপ দিয়ে আহত অবস্থায় একজনকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে নেওয়া হলে তাকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
‘বাংলার সৌরভ’ বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) তেল পরিবহনের ট্যাংকার হিসেবে ব্যবহৃত হতো বলে জানা গেছে।