সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্ত থেকে র্যাবকে সরিয়ে দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন টাস্কফোর্স গঠনের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এ বিষয়ে আগামী ৬ মাসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
আজ সোমবার দুপুরে বিচারপতি ফারাহ মাহবুবের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে এ সংক্রান্ত একটি রিট শুনানির পর এই আদেশ দেন।
এর আগে আজ সকালে সাংবাদিক দম্পতি সাগর ও রুনি হত্যার মামলার তদন্তের দায়িত্ব থেকে র্যাবকে সরিয়ে দিতে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।
বিচারপতি ফারাহ মাহবুবের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে এ আবেদন করা হয়। একই সঙ্গে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন তিন সদস্যের একটি টাস্কফোর্সকে এ ঘটনা তদন্ত করতে বলা হয়েছিল।
এর আগে রোববার সাগর-রুনি হত্যা মামলায় প্রথমবারের মতো আইনজীবী শিশির মনিরকে নিয়োগ করেন মামলার বাদী ও রুনির ভাই নওশের আলী রোমান।
আইনজীবী শিশির মনির বলেন, ক্রিমিনাল মামলার বিচারের দায়িত্ব রাষ্ট্রের। কিন্তু আইনে আছে কোনো ভুক্তভোগী কিংবা অভিযোগকারী চাইলেও ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৯৩ ধারা অনুযায়ী স্বাধীন আইনজীবী নিয়োগ করতে পারবেন।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকার পশ্চিম রাজাবাজারে মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সারোয়ার ও এটিএন বাংলার সিনিয়র রিপোর্টার মেহেরুন রুনি নিজেদের ভাড়া বাসায় নির্মমভাবে খুন হন। তাদের একমাত্র ছেলে মাহির সারোয়ার মেঘ (৫) সেসময় বাড়িতে ছিল।
এ ঘটনায় রুনির ভাই নওশের আলম রোমান রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলায় রুনির বন্ধু তানভীর রহমানসহ আট জনকে আসামি করা হয়।
বাকি আসামিরা হলেন-বাড়ির নিরাপত্তারক্ষী এনাম আহমেদ ওরফে হুমায়ুন কবির, রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মিন্টু ওরফে বারগিরা মিন্টু ওরফে মাসুম মিন্টু, কামরুল হাসান অরুণ, পলাশ রুদ্র পাল ও আবু সাঈদকে আসামি করা হয়। এদের মধ্যে তানভীর ও পলাশ রুদ্র জামিনে আছেন। বাকিরা এখনো কারাগারে।
এ মামলার তদন্তে প্রথমে শেরেবাংলা নগর থানার একজন এসআই নিয়োজিত ছিলেন। কিন্তু চার দিন পর ডিবি পুলিশকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। ডিবি পুলিশ দুই মাসে ব্যর্থ হলে হাইকোর্টের নির্দেশে মামলাটির তদন্তভার যায় র্যাবের কাছে।
কিন্তু দীর্ঘ ১১ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি সংস্থাটি।
চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলায় ২০২১ সালের মার্চ মাসে র্যাবের তদন্ত কর্মকর্তা হাইকোর্টে অগ্রগতির প্রতিবেদন দিয়ে বলেছিলেন, সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দুজন অপরিচিত ব্যক্তি জড়িত ছিল। সাগরের হাতে বাঁধা চাদর এবং রুনির টি-শার্টে ঐ দুই ব্যক্তির ডিএনএর প্রমাণ মিলেছে। অপরাধীদের শনাক্ত করতে ডিএনএ রিপোর্ট প্রস্তুতকারী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দুটি ল্যাবে যোগাযোগ অব্যাহত আছে। প্রতিষ্ঠান দুটি ডিএনএর মাধ্যমে অপরাধীর ছবি বা অবয়ব প্রস্তুতের কাজ করে যাচ্ছে।