আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা আসনের ৮ আসনের সংসদ সদস্য আ.ফ.ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, নির্বাচনের পর নির্বাচিত সরকারকে যখন সারা দুনিয়া থেকে সমর্থন দেয়, তখন তারা (বিএনপি) আন্দোলনের নামে মানুষকে পুড়িয়ে মারে। মানুষ তাদেরকে চায় না তবুও তারা কর্মসূচির নামে আবার আন্দোলন শুরু করেছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে প্রবীণ ও কর্মাহত সাংবাদিক কল্যাণ পরিষদের চতুর্থ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আ.ফ.ম বাহাউদ্দিন নাছিম সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, ‘দেশের মানুষের পক্ষে যিনি কাজ করতে পারেন, তাকে আপনারা জনমত সৃষ্টিতে সাপোর্ট করুন। যদি আপনার কলম কথা বলে, যদি আপনার বিবেক সায় দেয়, তবেই আপনি লিখুন। আর যারা দেশের রাজনীতির বিপক্ষে, গণতন্ত্রের বিপক্ষে, উন্নয়ন-অগ্রগতির বিপক্ষে বাধা সৃষ্টি করে, মাসের পর মাস বছরের পর বছর, যুগ পার হয়ে আন্দোলনের নামে তথাকথিত কথা বলে নির্বাচনের আগে বাধা দেয়, তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের পরে নির্বাচিত সরকারকে যখন সারা দুনিয়া থেকে সমর্থন দেয় তখন তারা (বিএনপি) আন্দোলনের নামে মানুষকে পুড়িয়ে মারে। মানুষ তাদেরকে চায় না তবুও তারা কর্মসূচির নামে আবার আন্দোলন শুরু করেছে। এটা কি রাজনৈতিক না অরাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, নাকি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, নাকি দেশকে এগিয়ে যাওয়ার পথে বাধা সৃষ্টি করার রাজনীতি? আসলে তারা নিজেরা এমন হতাশায় থাকে যে, তারা মানুষের প্রতি যে তাদের দায়িত্ব-কর্তব্য আছে— সেটা বোধ করে না। এরা কথা বলতে শিখেছে। এরা (বিএনপি) যা খুশি বলতে পারে, তাদের কোনও দায়-দায়িত্ব নেই। সব দায়িত্ব যেন আওয়ামী লীগের আর বাংলাদেশ সরকারের। তাই আমি বলতে চাই, এই অপরাজনীতির বিপক্ষে অপশক্তির বিপক্ষে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমি মনে করি, দল-মত নির্বিশেষে এই অশুভশক্তি অশুভ রাজনীতির নামে যারা রাজনীতিকে বিরাজনীতিকরণ করতে চায়, তাদের বিপক্ষে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তাদের বিপক্ষে প্রতিবাদ প্রতিরোধ গড়ে তুললেই বাঙালি জাতি মুক্তি পাবে।’
সভায় প্রধান অতিথির দৃষ্টি আর্কষণ করে তিনটি দাবি রাখে সাংবাদিক কল্যাণ পরিষদ।
তাদের দাবিগুলো হলো— বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে মাসিক ২০ হাজার টাকা ভাতা প্রদান, প্রবীণ ও কর্মাহতরা কোনও অভিযোগ ৩ মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করা এবং ‘গণমাধ্যমকর্মী আইন-২০২২’ এ প্রবীণ ও কর্মাহত সাংবাদিকদের মাসিক ভাতার বিষয়টি উল্লেখ করা।
এসব দাবিকে মানবিক ও গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করে বাহাউদ্দীন নাছিম বলেন, ‘এই দাবি পূরণে সাংবাদিক ইউনিয়ন, জাতীয় প্রেস ক্লাব, সরকার সবাইকে সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে।’
এই দাবি গুলো পূরণে নিজের অঙ্গীকারের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সরকারি চাহিদাপত্র (ডিও লেটার) প্রধানমন্ত্রীর দফতরে ও তথ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। তবে খুব তাড়াতাড়ি এসব দাবি পূরণ হবে— এমন আশা না করতেও বলেন তিনি। তবে কাজটা শুরু হোক, এমন প্রত্যাশা তার। সরকার ইচ্ছে করলে সবকিছু দিয়ে দিতে পারে না। সরকারের সীমাবদ্ধতাটিও বিবেচনা করার আহ্বান জানান তিনি।
প্রবীণ ও কর্মাহত সাংবাদিক কল্যাণ পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম করম আলীর সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন— জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন প্রমুখ।