সনাতন ধর্মের মহাবতার ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথি, শুভ জন্মাষ্টমী আজ।
দাপর যুগে এ মহাপুণ্য তিথিতে মথুরা নগরীতে অত্যাচারী রাজা কংসের কারাগারে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ জন্মগ্রহণ করেন। বন্দি দেবকী ও বাসুদেবের বেদনাহত ক্রোড়ে তিনি আবির্ভূত হন।
সনাতন শাস্ত্র অনুসারে-দুষ্টের দমন ও শিষ্টের লালন করতেই পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এ পৃথিবীতে আবির্ভূত হন। অত্যাচারীর বিরুদ্ধে দুর্বলের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং শান্তিহীন পৃথিবীতে শান্তি আনতেই শান্তিদাতা শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব।
তার শিক্ষা হলো-অন্যায়কে পরাভূত করে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। তার জন্মের সময় এ বিশ্বব্রহ্মাণ্ড পাপ ও অরাজকতায় পরিপূর্ণ ছিল। নানা ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে শ্রীকৃষ্ণ মানব জাতির কাছে জীবন ধারণের অনন্য উদাহরণ রেখে গেছেন। ইতিহাসে তিনি যাদবকৃষ্ণ ও দর্শনশাস্ত্রে সচ্চিদানন্দ বিগ্রহ কৃষ্ণ। শ্রীমদ্ভগবত গীতায় তিনি অবতারকৃষ্ণ, দার্শনিক কৃষ্ণ, পুরুষোত্তম কৃষ্ণ। ঈশ্বরতত্ত্বের মহান প্রতীক শ্রীকৃষ্ণ বেদে ঋষিকৃষ্ণ, দেবতাকৃষ্ণ। মহাভারতে তিনি রাজর্ষি কৃষ্ণ, শাসক ও প্রজাপালক কৃষ্ণ, অত্যাচারী দমনে যোদ্ধাকৃষ্ণ। তার বাণী সমগ্র বিশ্বকে হাজার হাজার বছর ধরে আলোড়িত করছে।
আজ শুভ জন্মাষ্টমী দেশব্যাপী ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা, ধর্মীয় আড়ম্বর ও আনুষ্ঠানিকতায় উদযাপন করা হবে। এদিন সব অকল্যাণ ও অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে অন্তরাত্মাকে জাগ্রত করার শপথ নেবেন কৃষ্ণপ্রেমীরা। জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে মহানগর সার্বজনীন পূজা উদযাপন কমিটি তিন দিনব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- আলোচনা সভা, দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনায় গীতাযজ্ঞ। আজ সরকারি ছুটির দিন। দিবসটি উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় সরকার বদ্ধপরিকর : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মানুষে মানুষে ভ্রাতৃত্ব স্থাপন এবং সমাজে সাম্য প্রতিষ্ঠা করাই ছিল শ্রীকৃষ্ণের লক্ষ্য। তার আদর্শ ও শিক্ষা বাঙালির হাজার বছরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
শুভ জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে বুধবার দেওয়া এক বাণীতে তিনি বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এদেশে সব ধর্ম ও বর্ণের মানুষ যুগ যুগ ধরে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছে। আমাদের সংবিধানে সব ধর্ম ও বর্ণের মানুষের সমানাধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। সনাতন ধর্মাবলম্বী সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করতে বদ্ধপরিকর। আমরা বিশ্বাস করি- ‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার।’
করোনাভাইরাস বাস্তবতায় সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে জন্মাষ্টমীর অনুষ্ঠান পালনের আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, জন্মাষ্টমীর এ উৎসব শ্রীকৃষ্ণের ভক্তগণকে তার জীবনাদর্শ অনুসরণ করতে আরও অনুপ্রেরণা জোগাবে। জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে তিনি দেশের সব নাগরিকের সুখ, শান্তি ও কল্যাণ কামনা করেন।