ঢাকাসোমবার, ২৩শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ কি আছে?

নিউজ ডেস্ক | সিটিজি পোস্ট
নভেম্বর ৬, ২০২৩ ১০:১৪ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

আমরা যে সংকটে রয়েছি তা নিয়ে কোনো সংশয় নেই। দেশে যে বিদ্যমান সরকার রয়েছে এরা পনেরো বছরের বেশি সময় ধরে ক্ষমতায়—অর্থাৎ তিনটি মেয়াদ পূর্ণ করেছে। একটি রাজনৈতিক দল তিন মেয়াদে রাষ্ট্রের ক্ষমতায় আসীন আছে তা তো সংকট নয়—দেশের মানুষ যদি চায় তাহলে তিন মেয়াদ বা চার মেয়াদে কোনো একটি রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় থাকতেই পারে। কিন্তু জনগণের সামনে সেই সুযোগটা থাকছে না যে ওরা চাইলেই নির্বাচনে ভোট দিয়ে সরকার পরিবর্তন করতে পারে।

সংকট হচ্ছে যে এই তিনটি মেয়াদের মধ্যে প্রথম মেয়াদ ছাড়া বাকি দুই সময়ে কোনো স্বাভাবিক গণতান্ত্রিক নির্বাচন ছিল না। ২০১৪ সালে যে নির্বাচন হয়েছে তাতে জাতীয় পার্টি ছাড়া বিএনপি বা অন্য কোনো উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক দল অংশ নেয়নি আর ২০১৮ সালে বিএনপিসহ অনেকগুলো রাজনৈতিক দল ও কিছু বিশিষ্ট ব্যক্তিকে নিয়ে বৃহৎ একটি জোট করে অংশ নিলেও নির্বাচনটি সাধারণভাবে নিরপেক্ষ হয়েছে বলে মানুষ মনে করে না।

ফলে এখন বদ্ধমূল ধারণা হয়েছে যে সরকারের এই মেয়াদ শেষে যে নির্বাচনটি হবে তাও গ্রহণযোগ্য হবে না। এই ধারণা থেকে আওয়ামী লীগ জোট এবং জেনারেল এরশাদের জাতীয় পার্টি ছাড়া বাকি প্রায় সব রাজনৈতিক দলই এই নির্বাচনে অংশ নেবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বর্তমান সরকার ভালো কাজ করেছে কি মন্দ কাজ করেছে বা ওদের জনপ্রিয়তা আছে কি নেই সেই আলোচনা এখানে প্রাসঙ্গিক নয়। দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা যদি স্থায়ী থাকে তাহলে মানুষ ভোট দিয়ে সরকার পরিবর্তন করতে পারে বা আওয়ামী লীগকেই আবার ক্ষমতায় রাখতে পারে। আওয়ামী লীগ এবং ওদের জোটের অংশীদাররা ছাড়া বাকি সব দলই মনে করে যে নির্বাচনের সময় আওয়ামী লীগ যদি ক্ষমতায় থাকে তাহলে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না।

দৃশ্যত এইরকম মনে করার যুক্তিসঙ্গত কারণও রয়েছে। এইদিকে আওয়ামী লীগ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা যেটা ২০০৬ সালের আগে বিদ্যমান ছিল সেই ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়ার কোনো ইচ্ছে নেই—সারা দুনিয়ায় যেভাবে নির্বাচন হয় আমাদের বর্তমান সংবিধানের আওতায় সেইভাবেই নির্বাচন হবে—কেউ সেই নির্বাচনে অংশ নিতে এলো কি এলো না তা গুরুত্ব দিচ্ছে না।

সংকটটা হচ্ছে এখানেই। যেনতেন প্রকারে একটা নির্বাচন যদি হয়ও, সেই নির্বাচনে যদি দেশের বড় দুই দলের এক দল অংশ না নেয় তাহলে তো জনগণ আর ওদের নিজেদের পছন্দমতো দলকে বা প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবে না। এর মানে হচ্ছে, উন্নয়ন বা অনুন্নয়ন ভালো কাজ কি মন্দ কাজ তার কোনোকিছুই জনগণ পছন্দ করছে কি করছে না, অনুমোদন করবে কি করবে না তার কোনো সুযোগ থাকল না।