যুক্তরাষ্ট্রের মেমোরি চিপ উৎপাদনকারী জায়ান্ট প্রতিষ্ঠান মাইক্রোনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে চীন। দেশটি বলেছে, মাইক্রোনের উৎপাদিত প্রযুক্তি পণ্যগুলো চীনের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
গত রোববার চীনের সাইবার স্পেস নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠান বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় মেমোরি চিপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মাইক্রোন আমাদের জন্য গুরুতর নেটওয়ার্ক নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করছে। এ জন্য চীনের প্রধান প্রকল্পগুলো থেকে মাইক্রোনের পণ্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্কের মধ্যে প্রথমবারের মতো চীন কোনো বড় চিপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করল। এর আগে চীনের চিপ শিল্পের বিরুদ্ধে একাধিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র এবং নিজেদের সেমিকন্ডাক্টর শিল্পকে উৎসাহিত করতে কোটি কোটি ডলার বিনিয়োগ করছে।
এক বিবৃতিতে চীনের সাইবার স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (সিএসি) বলেছে, ‘পর্যালোচনায় দেখা গেছে, মাইক্রোনের পণ্যগুলোতে গুরুতর নেটওয়ার্ক নিরাপত্তা ঝুঁকি রয়েছে। পণ্যগুলো চীনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য অবকাঠামো সরবরাহ শৃঙ্খলে ভীষণ নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। এটি চীনের জাতীয় নিরাপত্তার জন্যও ঝুঁকিপূর্ণ।’
তবে মাইক্রোনের কোন কোন পণ্য ঝুঁকিপূর্ণ সে ব্যাপারে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানায়নি সিএসি।
মাইক্রোনের একজন মুখপাত্র বিবিসিকে জানিয়েছেন যে তারা চীনে বিক্রি হওয়া মাইক্রোন পণ্যের পর্যালোচনার পরে সিএসির নোটিশ পেয়েছেন। এখন তারা কী পদক্ষেপ নেবেন তা নিয়ে আলোচনা চলছে। চীনের সঙ্গেও এ ব্যাপারে আলোচনায় বসতে মাইক্রোন আগ্রহী বলে জানিয়েছেন তিনি।
চীনের এ নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বিভাগের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ‘আমরা দৃঢ়ভাবে এ ধরনের নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করি। কারণ চীনের অভিযোগের কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই। তাদের কর্মকাণ্ডের কারণে মেমোরি চিপের বাজার নষ্ট হচ্ছে। এ ব্যাপারে আমরা আমাদের মিত্রদের সঙ্গে কাজ করব।’
এদিকে চীনের নিষেধাজ্ঞার খবর প্রকাশের পর যুক্তরাষ্ট্রে প্রি-মার্কেট ট্রেডিংয়ে মাইক্রোনের শেয়ারের দাম ৫ দশমিক ৩ শতাংশ কমে গেছে। তবে বিনিয়োগ ব্যাংকিং গ্রুপ জেফরিসের বিশ্লেষকেরা বলেছেন, ‘মাইক্রোনের ওপর চীনের নিষেধাজ্ঞার খুব বেশি প্রভাব পড়বে না। কারণ মাইক্রোন তার পণ্য বিক্রয়ের জন্য চীনের ওপর খুব বেশি নির্ভরশীল নয়।’