চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদ্যঘোষিত ৩৫টি ওয়ার্ড কমিটি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ত্যাগী ও পরিচ্ছন্ন নেতাকর্মীদের মূল্যায়নের প্রতিশ্রুতি থাকলেও বাস্তবে বেশিরভাগ নেতার বিরুদ্ধে আওয়ামী সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তুলেছেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ও প্রভাবশালী নেতা আবু সুফিয়ান।
বৃহস্পতিবার (৫ জুন) রাতে নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক প্রোফাইলে একটি স্ট্যাটাসে আবু সুফিয়ান এ অভিযোগ করেন। স্ট্যাটাসে তিনি বলেন, “চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির ঘোষিত ওয়ার্ড কমিটি নিয়ে পক্ষে বিপক্ষে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। এ ব্যাপারে কিছু না বলার চিন্তা করেছিলাম। কিন্তু বিবেকের তাড়নায় কিছু না বলে পারলাম না।”
বিশেষ করে চট্টগ্রাম-৮ আসনের আওতাধীন ৩ নম্বর পাঁচলাইশ, ৪ নম্বর চান্দগাঁও, ৫ নম্বর মোহরা, ৬ নম্বর পূর্ব ষোলশহর, ৭ নম্বর পশ্চিম ষোলশহর এবং ৪৩ নম্বর আমিন শিল্পাঞ্চল ওয়ার্ড কমিটির প্রসঙ্গ টেনে তিনি অভিযোগ করেন—এই ছয়টি ওয়ার্ডের নবগঠিত কমিটিতে যারা দায়িত্ব পেয়েছেন, তাদের মধ্যে হাতে গোনা কয়েকজন ছাড়া প্রায় সবাই আন্দোলন-সংগ্রামে নিষ্ক্রিয় ছিলেন। কারো কারো বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকার “গুরুতর অভিযোগ” রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
আবু সুফিয়ানের ভাষ্য অনুযায়ী, “কথা ছিল, দলের ত্যাগী, নির্যাতিত নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করা হবে। কিন্তু ঘোষিত কমিটিতে দেখা যাচ্ছে, তাদের কেবল বঞ্চিতই করা হয়নি, বরং অপমানিতও করা হয়েছে।”
সবার উদ্দেশে তিনি আহ্বান জানান, দলীয় সংকীর্ণতা থেকে বেরিয়ে এসে ঐক্যবদ্ধভাবে বিএনপিকে শক্তিশালী ও সংগঠিত করার লক্ষ্যে কাজ করতে।
গেল মঙ্গলবার (৩ জুন) বিএনপির পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম মহানগরের ৩৫টি ওয়ার্ড কমিটি ঘোষণা করা হয়। কেন্দ্র থেকে জানানো হয়েছিল, এসব কমিটিতে “পরিচ্ছন্ন ও ত্যাগী” নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করা হয়েছে। তবে ঘোষণার পরপরই তৃণমূল পর্যায়ে অসন্তোষ তৈরি হয় এবং কয়েকটি ওয়ার্ডে বিক্ষোভও হয় বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
বিএনপির অভ্যন্তরীণ বিশ্লেষকরা বলছেন, জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে দলকে চট্টগ্রামে সাংগঠনিকভাবে পুনর্গঠনের চেষ্টা চলছে। তবে এক্ষেত্রে পুরনো নেতাদের বাদ দিয়ে ‘সংশয়জনক’ লোকদের অগ্রাধিকার দেওয়ার অভিযোগ সংগঠনের ভেতরেই বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে।