ঢাকাবুধবার, ৪ঠা জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

বিতর্কিত কালোটাকা সাদা করার সুযোগ, ফ্ল্যাট নির্মাণে নির্ধারিত হারে কর দিলেই বৈধতা

নিউজ ডেস্ক | সিটিজি পোস্ট
জুন ৩, ২০২৫ ১২:৩৩ অপরাহ্ণ
Link Copied!

২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে আবারও বিতর্কিতভাবে ‘কালোটাকা’ বৈধ করার সুযোগ ফিরিয়ে আনা হয়েছে। অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জাতীয় সংসদে বাজেট উপস্থাপনকালে জানান, নির্ধারিত হারে কর পরিশোধ করে অ্যাপার্টমেন্ট বা ভবন নির্মাণে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগ করলে তার উৎস সম্পর্কে প্রশ্ন না করে সেটিকে বৈধ হিসেবে গণ্য করা হবে।

এই ব্যবস্থায় করদাতা আয়কর রিটার্নে অপ্রদর্শিত অর্থ উল্লেখ করলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সেই অর্থকে বৈধ বলে গণ্য করবে এবং উৎস নিয়ে কোনো অনুসন্ধান চালাবে না।

অঞ্চল অনুযায়ী প্রতি বর্গফুটে করের হার বিভিন্ন রকম নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু হল—

ঢাকার গুলশান, বনানী, বারিধারা, মতিঝিল, দিলকুশা (২০০০ বর্গফুটের বেশি): প্রতি বর্গফুটে ২০০০ টাকা

একই এলাকাগুলো (২০০০ বর্গফুটের কম): প্রতি বর্গফুটে ১৮০০ টাকা

ধানমন্ডি, মহাখালী, উত্তরা, বসুন্ধরা, চট্টগ্রামের খুলশী, পাঁচলাইশ, আগ্রাবাদ (২০০০ বর্গফুটের বেশি): প্রতি বর্গফুটে ১৮০০ টাকা

উল্লেখিত এলাকাগুলোতে (২০০০ বর্গফুটের কম): প্রতি বর্গফুটে ১৫০০ টাকা

সিটি করপোরেশন এলাকায় (১৫০০ বর্গফুটের বেশি): প্রতি বর্গফুটে ৭০০ টাকা

জেলা সদরের পৌর এলাকায়: প্রতি বর্গফুটে ২৫০-৩০০ টাকা

দেশের অন্যান্য এলাকায়: প্রতি বর্গফুটে ১০০-১৫০ টাকা

ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রেও এলাকাভেদে প্রতি বর্গফুটে ৫০ থেকে ৯০০ টাকা পর্যন্ত কর নির্ধারণের প্রস্তাব রয়েছে।

তবে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, অপরাধমূলক উৎস থেকে আসা অর্থ এই সুযোগের আওতায় বৈধ করা যাবে না।

অর্থনীতিবিদরা বরাবরই এই ধরনের সুযোগের বিরোধিতা করে আসছেন। তাদের মতে, এটি নৈতিকতা বিরোধী এবং সৎ করদাতাদের প্রতি অবিচার। এর আগে শেখ হাসিনার সরকারের আমলে ২০২৩-২৪ অর্থবছরেও এমন সুযোগ রাখা হয়েছিল, তখনও ব্যাপক সমালোচনা হয়।

২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন প্রশাসন এই সুবিধা বাতিল করেছিল। তবে এবার নতুন বাজেটে সেটি উচ্চ কর হারে আবার ফিরিয়ে আনা হয়েছ।

এনবিআর-এর তথ্য অনুযায়ী, স্বাধীনতার পর প্রায় সব সরকারই কোনো না কোনোভাবে কালোটাকা বৈধ করার সুযোগ দিয়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৪৭ হাজার কোটি টাকার বেশি কালোটাকা সাদা করা হয়েছে।

একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, ১৯৯১-১৯৯৬ মেয়াদে বিএনপি সরকার এমন কোনো সুযোগ দেয়নি। ২০২২-২৩ অর্থবছরে বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফেরাতে বিশেষ ছাড় দেওয়া হলেও কেউ সেই সুযোগ গ্রহণ করেননি।