বহুল আলোচিত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও পরিদর্শক মো. লিয়াকত আলীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছে হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ছয় আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও প্রত্যেকের ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও বহাল রাখা হয়েছে।
সোমবার (২ জুন) বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি মো. সগীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন। এর মাধ্যমে মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিল নিষ্পত্তি হলো।
এর আগে ২৯ মে এই মামলার শুনানি শেষ হয় এবং ২ জুন রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন আদালত। চলতি বছরের ২৩ জুন থেকে আপিল শুনানি শুরু হয়, যা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিষ্পত্তির সিদ্ধান্ত দেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ।
২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাত সাড়ে ৯টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের শামলাপুর তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান। গুলি চালান বাহারছড়া তদন্তকেন্দ্রের তৎকালীন পরিদর্শক লিয়াকত আলী।
৫ আগস্ট সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস আদালতে মামলা করেন। মামলার তদন্ত শেষে র্যাব ১৩ ডিসেম্বর ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র জমা দেয়, যেখানে হত্যাকাণ্ডকে “পরিকল্পিত হত্যা” বলে উল্লেখ করা হয়।
২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল প্রদীপ ও লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ড দেন। এছাড়া এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল রুবেল শর্মা ও সাগর দেব এবং স্থানীয় বাসিন্দা মো. নুরুল আমিন, মোহাম্মদ আইয়াজ ও মো. নিজাম উদ্দিনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। বাকি সাত আসামিকে খালাস দেওয়া হয়।
হাইকোর্টের এই রায়ের পর রাষ্ট্র ও নিহত সিনহার পরিবার সন্তোষ প্রকাশ করলেও খালাসপ্রাপ্তদের বিষয়ে আপিলের ইঙ্গিত দিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা।