চট্টগ্রামের নগর পরিবহন ব্যবস্থায় আসছে যুগান্তকারী পরিবর্তন। দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো মনোরেল নির্মিত হতে যাচ্ছে বন্দরনগরীতে। নগরীর দীর্ঘদিনের যানজট সমস্যা নিরসনে এই প্রকল্পকে ‘গেম চেঞ্জার’ হিসেবে দেখছেন নগর পরিকল্পনাবিদ ও ব্যবসায়ী মহল।
শনিবার (৩১ মে) দুপুর ১টায় চট্টগ্রাম ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (সিসিসি), জার্মান-মিশরীয় যৌথ মালিকানাধীন ওরাসকম গ্রুপ এবং আরব কন্ট্রাক্টরস গ্রুপ এর মধ্যে সমঝোতা স্মারক (MoU) সই হয়।
চুক্তি অনুযায়ী, প্রকল্পের প্রাথমিক পর্যায়ে এই দুই আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রামে মনোরেল নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাই (Feasibility Study) চালাবে।
চুক্তির পর মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, “চট্টগ্রামের আধুনিকায়নে এটি একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। নগরবাসীর দীর্ঘদিনের ভোগান্তি কমাতে মনোরেল বিশাল অবদান রাখবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সম্ভাব্যতা যাচাই শেষে নির্মাণ কাজ শুরু হবে বলে আশা করছি।”
পরিবহন বিশেষজ্ঞদের মতে, মনোরেল একটি আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব গণপরিবহন ব্যবস্থা। এটি মাটির ওপরে একক রেলের উপর চলে, যা ভূমি অধিগ্রহণ কমিয়ে আনে এবং বিদ্যমান অবকাঠামোর মধ্য দিয়েও সহজে চালানো সম্ভব।
মেট্রোর চেয়ে প্রায় ৪০ শতাংশ কম খরচে মনোরেল নির্মাণ করা যায়, এবং মাত্র ২ থেকে ২.৫ বছরে এটি চালু করা সম্ভব। ফলে এটি নগরের জন্য দ্রুত ও কার্যকর সমাধান।
চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সের একজন প্রতিনিধি বলেন, “নগরের ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য মনোরেল একটি নতুন দিগন্ত খুলে দেবে। শ্রমিক ও কর্মজীবী মানুষের যাতায়াত সহজ হলে উৎপাদন ও প্রবৃদ্ধি দুই-ই বাড়বে।”
নগরীর আগ্রাবাদ এলাকার একজন বাসিন্দা বলেন, “প্রতিদিন সকালে অফিসে যেতে আধা ঘণ্টার রাস্তা দুই ঘণ্টায় পাড়ি দিতে হয়। যদি মনোরেল আসে, তবে আমাদের জীবনে সত্যিই এক নতুন সকাল আসবে।”
