জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামের মুক্তি ঘিরে চট্টগ্রাম নগরীতে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (২৮ মে) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে নগরের জামালখান এলাকায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে এ সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে এক নারীসহ অন্তত ছয়জন আহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জামায়াত নেতার খালাসের প্রতিবাদে ‘গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট’ প্রেস ক্লাবের সামনে কর্মসূচি আহ্বান করে। একই সময় পাল্টা অবস্থানে নামে ‘এন্টি শাহবাগ মুভমেন্ট’ নামের একটি সংগঠন। শুরুতে উভয়পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিলেও একপর্যায়ে উত্তেজনা বাড়ে এবং ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে, ব্যানার ছিঁড়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়।
ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত থাকলেও প্রথমদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়। সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে রয়েছেন ‘বাম গণতান্ত্রিক জোট’র নেত্রী পুস্পিতা নাথ, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের চট্টগ্রাম শাখার সভাপতি ধ্রুব বড়ুয়া, সেক্রেটারি একান্ত বিশ্বাস, অর্থ সম্পাদক সুদিপ্ত গুহ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগঠক রিশাদ আহমেদ, নগর ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি রিপা মজুমদার এবং সদস্য অর্পিতা নাথ। আহতদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সরেজমিনে বিকেল ৪টার দিকে দেখা যায়, চেরাগি মোড় থেকে একটি দল স্লোগান দিতে দিতে প্রেস ক্লাবের দিকে অগ্রসর হয়। সিকদার হোটেলের সামনে একজনকে মারধর করতে দেখা যায়, যাদের ‘এন্টি শাহবাগ মুভমেন্ট’র কর্মী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, হামলাকারীদের মধ্যে ইসলামী ছাত্র শিবিরের কর্মীরাও ছিলেন।
সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দুজনকে আটক করেছে। তবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল করিম।
অন্যদিকে, ‘জুলাই ঐক্য চট্টগ্রাম’-এর প্রধান সমন্বয়কারী আবরার হাসান রিয়াদ জানান, বাম গণতান্ত্রিক জোটের ব্যানারে যারা অবস্থান নিয়েছিলো, তারা স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার দিকে আঙুল তুলেছে। শেখ হাসিনার প্রহসনের বিরুদ্ধে গিয়ে যারা ভূমিকা রেখেছিলো, তাদেরকে প্রহসনের শিকার করা হয়েছে৷ এতোদিন পরে যারা স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার ফলে যারা রায় পেয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে মব তৈরি করছেন। তারা হাসিনার প্রহসনমূলক ২০১৩ সালের শাহবাগের সেই স্লোগানগুলোই দিচ্ছে আবার, নতুন করে৷
আহতদের মধ্যে অনেকেই চট্টগ্রামের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ভ্যানগার্ড থাকার ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, হ্যাঁ এটা মানছি তাদের মধ্যে কয়েকজন ২৪ এর আন্দোলনে ভূমিকা রেখেছিলো, কিন্তু তারা এই আন্দোলনের আগে ও পরে ফ্যাসিবাদের দোসর ছিলো। এটাই হলো মূল বিষয়।