ঢাকাবৃহস্পতিবার, ২৯শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

সিডিএর উচ্ছেদ অভিযানে আবারও তছনছ কর্ণফুলীর পুরাতন ব্রিজঘাট : ক্ষুব্ধ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা

নিউজ ডেস্ক | সিটিজি পোস্ট
মে ২৭, ২০২৫ ১১:৪৫ অপরাহ্ণ
Link Copied!

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার পুরাতন ব্রিজঘাট এলাকায় আবারও উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)।

সোমবার (২৬ মে) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত টানা চার ঘণ্টার অভিযানে শত শত দোকান গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। দোকানপাট ভেঙে তছনছ করে দেওয়া হয়েছে সড়কের দুই পাশে গড়ে ওঠা কাঁচাবাজার এলাকাও।

ক্ষোভ ও ক্ষতির অভিযোগ স্থানীয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা জানান, কোনও ধরনের নোটিশ বা আগাম সতর্কতা ছাড়াই এই উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছে। এতে তাদের কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে এবং জীবিকার শেষ সম্বলটুকুও হারিয়েছেন তারা। পুরাতন ব্রিজঘাট কাঁচাবাজারটি দীর্ঘদিন ধরেই স্থানীয়দের জন্য বেঁচে থাকার অবলম্বন ছিল।

সিডিএর অবস্থান সিডিএর কর্মকর্তারা জানান, উচ্ছেদকৃত জমি মূলত সংরক্ষিত রাস্তার জন্য নির্ধারিত ছিল এবং তা চউকের মালিকানাধীন। এলএ মামলা ও বিএস খতিয়ান অনুযায়ী সিডিএ ওই জমির বৈধ মালিক। প্রকৌশলী কাজী কাদের নেওয়াজ টিপু বলেন, “এই জমি কোনো বাজার বা খাস জমি নয়। রাস্তা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে এটি সংরক্ষিত ছিল।”

ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ও বিরোধ ২০০৮ সালেও একই জায়গায় ইজারা দেয়ার উদ্যোগ নেওয়া হলেও সিডিএর আপত্তিতে তা বাতিল করা হয়েছিল। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে আবারও দরপত্র আহ্বান করা হয়, যার পর থেকেই বাজারটি উচ্ছেদের মুখে পড়ে বারবার।

ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি জাহেদুর রহমান জাহেদ বলেন, “অতীতে কয়েকবার উচ্ছেদে লাখ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এবার আবারও একই ঘটনা ঘটল। আমরা মানববন্ধনের প্রস্তুতি নিচ্ছি।”

চউক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. নুরুল করিম জানিয়েছেন, উচ্ছেদকৃত জমিতে বহুতল মার্কেট ও বিনোদন স্পট নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

প্রেক্ষাপট এই এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে কোন ধরনের স্থায়ী বাজার প্রকল্প হাতে না নেওয়ায়, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ঠেলা, ভ্যান ও রাস্তার পাশে অস্থায়ীভাবে বাজার পরিচালনা করতেন। অথচ একই জমির বিস্তৃত অংশে মইজ্জ্যারটেক পর্যন্ত কোন উচ্ছেদ অভিযান চালানো হচ্ছে না বলে ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করছেন।

বিশ্লেষণ পুরাতন ব্রিজঘাট উচ্ছেদ কেবল একটি স্থানীয় ইস্যু নয়, এটি বৃহত্তর নগর উন্নয়ন ও ন্যায্য পুনর্বাসন প্রশ্নকে সামনে নিয়ে এসেছে। উন্নয়নের নামে জীবিকার নিশ্চয়তা না দিয়ে এমন উচ্ছেদ পুনর্বাসনহীন ‘গণবিরোধী উন্নয়ন’ বলেই মনে করছেন অনেকেই।

চলমান বিতর্কের কেন্দ্রে রয়েছে—উন্নয়ন বনাম জীবিকা, পরিকল্পনার স্বচ্ছতা, আর ন্যায্যতার প্রশ্ন।