চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার পাহাড়তলী ইউনিয়নে একটি বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ভোররাতে ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় মহিলাদের মারধর করে ৬ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, নগদ অর্থ এবং মোবাইল ফোন লুট করে নিয়ে গেছে ডাকাতদল।
ডাকাতির ঘটনাটি ঘটেছে রাউজানের পাহাড়তলীর ৮ নম্বর ওয়ার্ডের শেখপাড়া গ্রামের ফুলা পুকুর পাড় এলাকায় হাজী সোলেমানের বাড়িতে।
ভুক্তভোগী পরিবার ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, ডাকাতরা টিনের চাল কেটে বাড়িতে প্রবেশ করে শয়ন কক্ষের দরজা ভেঙে হাজী সোলেমান ও তার ভাই মৃত আবুল কালামের পরিবারের সদস্যদের মারধর করে। এ সময় তারা নারী সদস্যদের হাত-পা বেঁধে স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ অর্থ ছিনিয়ে নেয়।
ভুক্তভোগী জাহেদুল ইসলাম ইমরুল বলেন, “ডাকাতরা রাত সাড়ে তিনটার দিকে ঘরে ঢুকে আমার বাবা, চাচী ও স্ত্রীকে মারধর করে। আমার ছোট ছেলেকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। তারা আমার স্ত্রীর ও চাচীর ৬ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, নগদ প্রায় এক লাখ টাকা এবং তিনটি মোবাইল নিয়ে যায়।”
তিনি আরও বলেন, “আমি শহরে নাইট শিফটে কাজ করি। বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা ছাড়া পুরুষ সদস্য ছিল না। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।”
ভুক্তভোগী আয়শা বেগম বলেন, “ডাকাত দলের সদস্যরা নিজেদের মেহমান পরিচয় দিয়ে ঘরে ঢোকে। পরে ভয় দেখিয়ে আমাদের হাত-পা বেঁধে স্বর্ণালঙ্কার ও টাকা নিয়ে যায়।”
স্থানীয় মসজিদের ইমাম মাওলানা শিহাব উদ্দিন বলেন, “আজানের সময় কয়েকজন তরুণ দৌঁড়ে পালিয়ে যেতে দেখি। টর্চলাইট মারলে তারা গুচ্ছ গ্রামের দিকে পালিয়ে যায়।”
পার্শ্ববর্তী একটি গরুর খামারের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ভোর ৪টা ২৩ মিনিটে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত ১১-১২ জনের একটি যুবকের দল বাড়ি থেকে বের হয়ে দৌড়ে দেওয়ানপুর সড়কের দিকে চলে যায়।
ভুক্তভোগী পরিবারকে দেখতে আসা মো. সোলেমানের চাচাত ভাই আব্দুল শুক্কুর বলেন, “দীর্ঘ দেড় দশকের বেশি সময় পর এই এলাকায় ডাকাতির ঘটনা ঘটল। আমরা দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবি জানাই।”
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভুঁইয়া বলেন, “এখনো পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আলামত সংগ্রহ করেছি। লুট হওয়া মোবাইল ফোনটির সর্বশেষ অবস্থান ট্র্যাক করা হচ্ছে। আমরা রাতে অভিযান চালাবো।”