চট্টগ্রামে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি পালন করছেন প্রাইম মুভার, ট্রেইলার, কংক্রিট মিক্সার, ফ্ল্যাটবেড এবং ডাম্প ট্রাক চালক ও শ্রমিকরা। মঙ্গলবার রাতে পুলিশের হাতে সংগঠনের সভাপতি ও চালক মারধরের ঘটনার প্রতিবাদে এই কর্মসূচি ডাকে চট্টগ্রাম জেলা প্রাইম মুভার ট্রেইলার, কংক্রিট মিক্সার, ফ্ল্যাটবেড, ডাম্প ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়ন।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সকাল ৬টা থেকে শুরু হওয়া এই কর্মবিরতির ফলে চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার পরিবহন কার্যক্রম পুরোপুরি অচল হয়ে পড়েছে। শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আবুল খায়ের জানান, শুধুমাত্র বন্দরের নয়, দেশের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমেও এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে।
প্রতিবাদের সূত্রপাত ঘটে মঙ্গলবার রাতে চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ এলাকায়। একটি প্রাইম মুভার থামিয়ে পুলিশ একটি ছুরিকাহত রোগী পরিবহনের চেষ্টা করে। চালকরা জানান, এত বড় ভারী যন্ত্রচালিত যানবাহনে রোগী পরিবহন সম্ভব নয় বলায়, ক্ষিপ্ত হয়ে ডবলমুরিং থানার ওসি ও তার সঙ্গীয় পুলিশ সদস্যরা সংগঠনের সভাপতি সেলিম খান, চালক দেলোয়ার ও ফয়সাল-কে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে।
এর প্রতিবাদে শ্রমিক ইউনিয়ন বুধবার কর্মবিরতির ঘোষণা দেয়, যা বৃহস্পতিবার থেকে কার্যকর হয়।
আবুল খায়ের বলেন, “আমরা ডবলমুরিং থানার পুলিশের হামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চাই। এখন আমরা বন্দর জোনের ডেপুটি কমিশনারের কার্যালয়ে আলোচনার জন্য এসেছি। যদি আমরা আমাদের দাবির যৌক্তিক আশ্বাস পাই, তাহলে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করা হবে।”
উল্লেখ্য, দেশের ৯৯ শতাংশ আমদানি-রপ্তানি পণ্য কনটেইনারে পরিবাহিত হয়, যার প্রায় পুরোটাই চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। এই বন্দরে প্রতিদিন প্রায় ৭ হাজার প্রাইম মুভার পণ্য পরিবহনে কাজ করে। ফলে এই কর্মবিরতির প্রভাব শুধু চট্টগ্রামে সীমাবদ্ধ না থেকে সারা দেশের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটাচ্ছে।
এখন শ্রমিকদের মূল দাবি—নিরপেক্ষ তদন্ত, দায়ীদের শাস্তি এবং শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। আলোচনা সফল না হলে এই অচলাবস্থা আরও দীর্ঘায়িত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।