ঢাকাবুধবার, ১৪ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

তারা ফিরবে না তবু ফিরেছেন গাউনে, স্মৃতির গ্রাফিতিতে ফরহাদ-তরুয়া-পলাশ

নিউজ ডেস্ক | সিটিজি পোস্ট
মে ১৪, ২০২৫ ১:৪৪ অপরাহ্ণ
Link Copied!

কালো গাউন, মাথায় টুপি, হাতে সনদ—শিক্ষাজীবনের শেষ অধ্যায়ে প্রতিটি শিক্ষার্থীর স্বপ্নের রূপ এটি। বছরের পর বছর ক্লাস, পরীক্ষা, হতাশা ও আশার সীমানা পেরিয়ে একদিন আসে সমাবর্তনের দিন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজারো শিক্ষার্থীর মতো এমন দিন আসতে পারতো ফাহিম, হৃদয় কিংবা ফরহাদের জীবনেও। কিন্তু তারা থেমে গেছেন অন্য এক অধ্যায়ে—ইতিহাসে।

২০২৫ সালের এই দিনটি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সমাবর্তন হলেও, কিছু মুখের শূন্যতা অনুভব করছেন সবাই। গত বছরের ভয়াবহ বন্যায় নোয়াখালীতে ত্রাণ দিতে গিয়ে মারা যান পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ফাহিম আহমেদ পলাশ।

আর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় পুলিশের হামলায় প্রাণ হারান ইতিহাস বিভাগের ২০২০-২১ বর্ষের শিক্ষার্থী হৃদয় চন্দ্র তরুয়া এবং ২০২১-২২ বর্ষের মো. ফরহাদ হোসাইন। তারা এখন শুধু ডিপার্টমেন্টের খাতায় নাম নয়, হয়ে উঠেছেন এক একটি অধ্যায়।

সমাবর্তনের আনন্দময় ভিড়ের মাঝেও তাদের স্মৃতি ভুলে যাননি সহপাঠীরা। সমাজবিজ্ঞান অনুষদের পাশের একটি দেয়ালে আঁকা গ্রাফিতি যেন সময়কে থামিয়ে রেখেছে। সেখানে তিনজনের মুখ—গাউন ও টুপি পরা, হাতে সনদ।
মাঝখানে হৃদয়, তার একপাশে ফরহাদ, অন্যপাশে পলাশ।

এই গ্রাফিতির সামনে দাঁড়িয়ে বহু সমাবর্তী শিক্ষার্থী বলছেন,”তারা বেঁচে থাকলে হয়তো আজ আমাদের সঙ্গে থাকত। বিভাগে গল্প করত, ছবি তুলত।”

এই গ্রাফিতি তাদের ফেরায় না, কিন্তু ভুলতেও দেয় না। সমাবর্তনের উৎসবমুখর দিনে তাই শুধু খুশি নয়, রয়েছে কিছু নিঃশব্দ সম্মান, কিছু অশ্রুসিক্ত শ্রদ্ধা।

সমাবর্তন মানে শুধুই সনদ নয়—এটি স্মৃতি, ত্যাগ, প্রতিবাদ আর সাহসেরও উদযাপন। হৃদয়, ফরহাদ ও পলাশ—তারা হয়তো নেই আজকের অনুষ্ঠানে, কিন্তু ইতিহাস হয়ে থেকে গেছেন চিরকাল।