ঢাকাসোমবার, ১২ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

লুঙ্গি-গেঞ্জির ছদ্মবেশে দেশত্যাগ করেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, তদন্ত কমিটি গঠন

নিউজ ডেস্ক | সিটিজি পোস্ট
মে ১১, ২০২৫ ২:১৪ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ছদ্মবেশে দেশত্যাগ করেছেন। গত বুধবার দিবাগত রাত ১টার দিকে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে (ফ্লাইট নম্বর: টিজি৩৪০) তিনি গোপনে থাইল্যান্ডের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছেড়েছেন। তার এ দেশত্যাগকে ঘিরে প্রশাসন, রাজনীতি ও সাধারণ মানুষের মধ্যে নানা প্রশ্ন ও আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

ইমিগ্রেশন সূত্রে জানা গেছে, তিনি শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিআইপি টার্মিনালে লুঙ্গি, গেঞ্জি ও মুখে মাস্ক পরে উপস্থিত হন। তার গাড়ি বিমানবন্দরে পৌঁছালে শুরুতে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। পরে এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা এসে জানান, আবদুল হামিদের দেশত্যাগের অনুমতি রয়েছে। এরপর তাকে বিমানে ওঠার অনুমতি দেওয়া হয়।

জানা গেছে, ইমিগ্রেশনের সময় তিনি কূটনৈতিক সুবিধার আওতায় থাকা একটি লাল পাসপোর্ট (ডি০০০১০০১৫) ব্যবহার করেছেন, যার মেয়াদ রয়েছে ২০৩০ সাল পর্যন্ত। যদিও শেখ হাসিনাসহ সাবেক সরকারের অধিকাংশ মন্ত্রী-এমপিদের লাল পাসপোর্ট ইতোমধ্যে বাতিল করা হয়েছে, আবদুল হামিদের পাসপোর্টটি তখনও কার্যকর ছিল।

বিশেষ সূত্রে জানা গেছে, আবদুল হামিদের সুবিধার্থে ফ্লাইটটি ভিআইপি টার্মিনালের কাছাকাছি আনা হয় এবং তিনি সেখানেই পোশাক পরিবর্তন করে বিমানে ওঠেন।

এই ঘটনায় দেশজুড়ে চাঞ্চল্য তৈরি হলে পরদিন কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. হাছান চৌধুরীকে প্রত্যাহার করা হয়। একইসঙ্গে বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশনে কর্মরত একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে প্রত্যাহার ও দুইজন উপপরিদর্শক এবং সহকারী উপপরিদর্শককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, কার অনুমতিতে ও কীভাবে সাবেক রাষ্ট্রপতি দেশত্যাগ করলেন, তা খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিন কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্তে কারো দায়িত্বহীনতা প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।

পাসপোর্ট অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা জানান, “সাবেক রাষ্ট্রপতিরা আমৃত্যু বিচারপতির মর্যাদা ভোগ করেন। বর্তমানে বিদ্যমান আইনেও তাদের পাসপোর্ট বাতিল সংক্রান্ত কোনো নির্দিষ্ট বিধান নেই।”

এই ঘটনায় প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে সমন্বয়হীনতা এবং স্বচ্ছতার অভাব নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।