ঢাকাবৃহস্পতিবার, ৮ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

খাগড়াছড়ির তিনটি সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে ৬৬ ভারতীয় নাগরিককে পুশইন করল বিএসএফ

নিউজ ডেস্ক | সিটিজি পোস্ট
মে ৭, ২০২৫ ৭:১৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ভোরের প্রথম আলো ফোটার আগেই খাগড়াছড়ি জেলার সীমান্ত অঞ্চলে শুরু হয় এক অস্বাভাবিক মানবপ্রবাহ। মাটিরাঙ্গা উপজেলার গুমতি ইউনিয়নের দক্ষিণ শান্তিপুর সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন প্রায় ২৭ জন ভারতীয় নাগরিক, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। সীমান্ত পেরিয়ে তারা আশ্রয় নেন স্থানীয় এক বাসিন্দা আবু তাহেরের বাড়িতে। পরে তাদের স্থানান্তর করা হয় আবুল হোসেন মেম্বারের বাড়িতে। একই দিনে রাতের অন্ধকারে মাটিরাঙ্গার তাইন্দং সীমান্ত দিয়ে আরও ১৫ জন এবং পানছড়ির লোগাং সীমান্ত দিয়ে ২৪ জন ভারতীয় নাগরিক বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেন। এইভাবে মাত্র একদিনেই তিনটি সীমান্ত দিয়ে মোট ৬৬ জন ভারতীয় নাগরিককে বাংলাদেশে পুশইন করে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ।

খাগড়াছড়ির ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক নাজমুন আরা সুলতানা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এই পুশইনের ঘটনাগুলো সম্পূর্ণভাবে প্রমাণিত এবং এখন পর্যন্ত যেসব তথ্য পাওয়া গেছে, তাতে সীমান্ত পয়েন্ট তিনটি থেকেই জোরপূর্বক অনুপ্রবেশ ঘটেছে। এই মানুষগুলো বর্তমানে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর হেফাজতে রয়েছে এবং তাদের পরিচয় যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলছে।

ঘটনাটি কেবল একটি মানবিক সংকট নয়, বরং রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্ব ও আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক নীতির ক্ষেত্রেও গুরুতর প্রশ্ন তুলে দেয়। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, কোনো দেশ তার নাগরিকদের জোর করে অন্য রাষ্ট্রের ভূখণ্ডে পাঠাতে পারে না। ভারতের বিএসএফ-এর এই আচরণ আন্তর্জাতিক রীতিনীতির পরিপন্থী এবং দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে বিদ্যমান আস্থার পরিবেশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

এই অনুপ্রবেশকারীদের ভবিষ্যৎ কী হবে, তা এখনও অনিশ্চিত। প্রশাসন বলছে, মানবিক দিক বিবেচনায় তাদের আশ্রয় দেওয়া হয়েছে, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে তাদের কীভাবে মোকাবিলা করা হবে, তা নির্ভর করছে সরকারের উচ্চপর্যায়ের সিদ্ধান্তের ওপর। তবে স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে—সীমান্তের নিরাপত্তা কতটা সুনিশ্চিত, আর এমন পুশইন যদি নিয়মিত রূপ নেয়, তবে তার প্রভাব কী হবে বাংলাদেশ সমাজ ও রাষ্ট্রের উপর?