ঢাকাবুধবার, ৭ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মঙ্গলবার দেশব্যাপী ‘কালো পতাকা’ মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা ছাত্রসেনার

নিউজ ডেস্ক | সিটিজি পোস্ট
মে ৬, ২০২৫ ১:০৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনার ডাকা শান্তিপূর্ণ সড়ক অবরোধ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

সোমবার (৫ মে) সকালে অনুষ্ঠিত কর্মসূচিতে পুলিশের পাশাপাশি ‘অজ্ঞাত’ কিছু লাঠিসোঁটা-সজ্জিত যুবকের হামলায় আহত হন বহু নেতাকর্মী। চট্টগ্রামে পুলিশি অভিযানে ছাত্রসেনার অন্তত ২৭ জন নেতাকর্মীকে আটক করা হয়। এই ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় দেশব্যাপী ‘কালো পতাকা’ মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে সংগঠনটি।

চট্টগ্রাম নগরের শাহ আনিস মসজিদ মার্কেট এলাকায় যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন ইসলামী ছাত্রসেনার কেন্দ্রীয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাহেদুল আলম। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশের সঙ্গে চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছে। বিশেষ করে মুরাদপুর, অক্সিজেন মোড়, রাঙ্গুনিয়া, বাঁশখালী ও ফটিকছড়ি এলাকায় পুলিশের লাঠিচার্জ ও গ্রেপ্তার অভিযানে বহু কর্মী আহত হয়েছেন।”

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা অভিযোগ করেন, হামলায় অংশগ্রহণকারীদের পরিচয় সবার জানা থাকলেও ‘নাম বললে বিপদ হতে পারে’—এই আশঙ্কায় তারা প্রকাশ্যে কিছু বলছেন না। তবে তারা দাবি করেন, হামলাকারীদের ছবি ও পরিচয় সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

সাহেদুল আলম অভিযোগ করেন, “চট্টগ্রামের জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদ্রাসার আশপাশে পুলিশি হয়রানি ও উত্তেজনা সৃষ্টি ইচ্ছাকৃতভাবে করা হয়েছে। এই ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান সুন্নি বিশ্বাস ও আধ্যাত্মিকতার প্রতীক। সেখানে আজকের হামলা কেবল একটি জায়গার ওপর নয়, বরং সুন্নি মুসলমানদের আত্মমর্যাদার উপর আঘাত।”

তিনি বলেন, “আমরা পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিচ্ছি— জামেয়া এলাকাসহ কোনো ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানকে কেন্দ্র করে পুলিশের আগ্রাসী আচরণ এক গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ।”

গাজীপুরে শিশু বলাৎকারের অভিযোগে নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা যাওয়া ইমাম রইস উদ্দিন হত্যার বিচার প্রক্রিয়া নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন ছাত্রসেনা নেতারা। “মামলা দায়ের হলেও অপরাধীরা এখনও গ্রেপ্তার হয়নি,” বলেন সাহেদুল। তিনি আরও দাবি করেন, “আদালত, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এখনও সুবিচার প্রতিষ্ঠায় আন্তরিক নয়।”

গ্রেপ্তারকৃত নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়ে সাহেদুল আলম বলেন, “আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছি। কিন্তু এভাবে যদি বাধা, গ্রেপ্তার ও হামলা চলতে থাকে, তাহলে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।”

মঙ্গলবার (৬ মে) দেশব্যাপী কালো পতাকা মিছিল এবং ঢাকা ও চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচির মাধ্যমে প্রতিবাদ জানানোর ঘোষণা দেন তিনি।

গত ২৭ এপ্রিল গাজীপুরের হায়দারাবাদ এলাকার একটি মসজিদের খতিব ও ছাত্রসেনার সাবেক কেন্দ্রীয় সদস্য মাওলানা মুহাম্মদ রইস উদ্দিনকে শিশু বলাৎকারের অভিযোগে স্থানীয়রা গাছে বেঁধে মারধর করেন। পরদিন সকালে তিনি কারাগারে মারা যান। ছাত্রসেনার দাবি— এটি ছিল পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড এবং মিথ্যা অপবাদ।

এই ঘটনার পর থেকে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আত ও ছাত্রসেনা ধারাবাহিকভাবে কর্মসূচি দিয়ে আসছে। এর মধ্যে রয়েছে ‘মার্চ টু গাজীপুর’, লালদীঘি সমাবেশ এবং সর্বশেষ সড়ক অবরোধ কর্মসূচি।