রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে অনিয়ন্ত্রিতভাবে ছড়িয়ে পড়া বর্জ্যের কারণে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে শত শত একর আবাদি জমি চাষাবাদের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বিষাক্ত বর্জ্যে দূষিত নদী-খাল পরিণত হয়েছে ড্রেনে, ফলে ফসল নষ্ট হয়ে কৃষকরা পড়েছেন চরম ক্ষতির মুখে। দীর্ঘ আট বছরেও কার্যকর কোনো সমাধান না আসায় হতাশ স্থানীয় কৃষক ও বাসিন্দারা।
উখিয়ার পশ্চিম বালুখালী এলাকার কৃষক গফুর উল্লাহ বলেন, “২০১৭ সালের আগে আমার ২০ একর জমিতে ধান ও সবজি হতো। এখন পুরো জমি চাষের অযোগ্য। পলিথিন, বোতল, মেডিকেল বর্জ্যে জমি নষ্ট হয়ে গেছে।”
আরেক কৃষক ফরিদ আলম বলেন, “গত ৮ বছরে চাষ করতে পারছি না, কোনো সহায়তা পাইনি। খুব কষ্টে আছি।”
কুতুপালংয়ের কৃষক মোহাম্মদ রাশেদ বলেন, “আমার দুই একর জমি সম্পূর্ণভাবে নষ্ট হয়ে গেছে। আমরা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিলেও আজ খেসারত দিতে হচ্ছে।”
রাজাপালং ইউনিয়নের ইউপি সদস্য হেলাল উদ্দিন জানান, “৩২টি ক্যাম্পের বর্জ্য ড্রেন হয়ে জমিতে প্রবাহিত হচ্ছে। বর্ষা নামলেই জমি ডুবে যায়। কয়েকশ একর জমি একেবারে শেষ।”
কক্সবাজার কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, ২০১৫ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে টেকনাফে আবাদি জমি প্রায় ২,৭০০ হেক্টর কমেছে; উখিয়ায় কমেছে প্রায় ৮৪০ হেক্টর।
সমুদ্র গবেষক মো. আব্দুল কাইয়ুম বলেন, “বর্জ্য নদী হয়ে সাগরে যাচ্ছে—এটা শুধু কৃষি নয়, সামুদ্রিক পরিবেশের জন্যও বড় হুমকি।”
এলাকাবাসীর দাবি, অন্তত এক হাজার কৃষক এই সমস্যার শিকার হলেও এখন পর্যন্ত সরকারি বা আন্তর্জাতিক কোনো সহায়তা তারা পাননি। তারা দ্রুত বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কার্যকর ব্যবস্থা ও ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য পুনর্বাসনের দাবি জানিয়েছেন।