চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলে নবম শ্রেণির সব শিক্ষার্থীকে জোর করে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি করানোর অভিযোগ উঠেছে। এতে করে যারা মানবিক বা ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে পড়তে চাচ্ছিল, তারা পড়েছে চরম দুশ্চিন্তায়। অভিভাবকরা বলছেন, বিষয়টি সম্পূর্ণ অন্যায্য ও শিক্ষার্থীবান্ধব নয়।
অভিভাবকদের ভাষ্য, স্কুলে মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষার জন্য পর্যাপ্ত শিক্ষক না থাকায় স্কুল কর্তৃপক্ষ এসব বিভাগ চালু করতে চাচ্ছে না। ফলে অনেক শিক্ষার্থী ইতিমধ্যে ট্রান্সফার সার্টিফিকেট (টিসি) নিয়ে অন্য স্কুলে চলে গেছে।
এক অভিভাবক নুরুল আলম জানান, তার ছেলে মানসিক প্রতিবন্ধকতায় ভুগছে এবং বিজ্ঞান বিভাগে পড়া তার জন্য অত্যন্ত কঠিন হবে। তিনি অভিযোগ করেন, বিষয়টি স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোনো বাস্তব সমাধান পাননি। ফলে তিনি জেলা প্রশাসন ও শিক্ষা বোর্ডে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিভাবকদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, অষ্টম শ্রেণির ফলাফলের ভিত্তিতে বিভাগ নির্ধারণের কোনো প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি। শিক্ষার্থীদের পছন্দকেও আমলে নেওয়া হয়নি।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রেহেনা আখতার জানান, পূর্বে অধিকাংশ শিক্ষার্থীই বিজ্ঞান বিভাগে পড়ত, ফলে অন্য বিভাগগুলো ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যায়। এ বছর লটারির মাধ্যমে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে মাত্র ১১ জন বিজ্ঞান ছাড়া অন্য বিভাগে পড়তে আগ্রহী হওয়ায় আলাদা বিভাগ চালু করা সম্ভব নয় বলে দাবি করেন তিনি।
চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের উপ-পরিদর্শক মোহাম্মদ আবুল বাসার বলেন, “কোনো শিক্ষার্থীকে জোর করে নির্দিষ্ট বিভাগে ভর্তি করানো আইনসম্মত নয়। সব বিভাগ চালু রাখার ব্যবস্থা করা উচিত।”
এদিকে, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোহাম্মদ শরীফ উদ্দিন বলেন, “যদি বিজ্ঞান ছাড়া অন্য বিভাগ চালুর সুযোগ না থাকে, তাহলে স্কুল কর্তৃপক্ষ সব শিক্ষার্থীকে কীভাবে ভর্তি নিল?” তিনি বিকল্প হিসেবে শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেন।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে অভিভাবকদের মধ্যে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তারা দ্রুত বিভাগীয় সমাধান না হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছেন বলে জানা গেছে।