খাগড়াছড়ির গিরিফুল এলাকা থেকে অপহৃত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) পাঁচ শিক্ষার্থীর দ্রুত মুক্তির দাবিতে এবার রাজপথে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আদিবাসী শিক্ষার্থীরা। শনিবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকসু কেন্দ্রের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আদিবাসী ছাত্র সমাজের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন চবির শিক্ষার্থী জাল্লাং এনরিকো কুবি। তিনি বলেন, “গত ১৬ এপ্রিল সকালে খাগড়াছড়ির গিরিফুল এলাকা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচজন শিক্ষার্থী অস্ত্রের মুখে অপহরণ হন। অপহরণের তিন দিন পার হলেও এখনো তাদের কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও দৃশ্যমান কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ চোখে পড়ছে না।”
অপহৃত শিক্ষার্থীরা হলেন: চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী মৈত্রীময় চাকমা ও অলড্রিন ত্রিপুরা, নাট্যকলা বিভাগের দিব্যি চাকমা, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের রিশন চাকমা এবং প্রাণীবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী লংঙি স্রো—পাঁচজনই ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
আদিবাসী শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, এই অপহরণকাণ্ডে পার্বত্য অঞ্চলের আঞ্চলিক দল ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)-এর সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।
জাল্লাং এনরিকো কুবি বলেন, “এই ঘটনায় আমরা চরমভাবে উদ্বিগ্ন। প্রশাসন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অবগত থাকার পরও তাদের উদ্ধার করা যায়নি। এমতাবস্থায় আমরা আগামীকাল (রোববার) থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আন্দোলনে নামার ঘোষণা দিচ্ছি।”
এসময় শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের কাছে তিন দফা দাবি তুলে ধরেন:
১. অপহৃত পাঁচ শিক্ষার্থীকে অবিলম্বে নিঃশর্তভাবে ও সুস্থ অবস্থায় মুক্তি দিতে হবে।
২. শিক্ষার্থীদের উদ্ধারে কার্যকর ও যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।
৩. অপহরণের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
শিক্ষার্থীরা আরও জানান, দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত আদিবাসী শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠন ও মানবাধিকার কর্মীরাও এই ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানাচ্ছেন এবং দ্রুত মুক্তির দাবিতে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন।
অপহরণের ঘটনা নিয়ে এখনো কোনো পক্ষ দায়িত্ব স্বীকার না করলেও পাহাড়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি ও আদিবাসী জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।