পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়িতে চাকমা সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান সামাজিক উৎসব বিজু আয়োজন শুরু হয়েছে ফুল ভাসিয়ে। তবে শনিবার (১২ এপ্রিল) ভোরে চেঙ্গী নদীর খবংপুড়িয়া অংশে সংবাদ সংগ্রহে গিয়ে বাধার মুখে পড়েন কয়েকজন সাংবাদিক। স্থানীয় কয়েকজন চাকমা যুবক সাংবাদিকদের সংবাদ সংগ্রহে বাধা দেন এবং ‘No Journalist, No Photography’, ‘বায়াসড মিডিয়া, বায়াসড সাংবাদিক’, ‘দুঃসময়ে সাংঘাতিক, সুসময়ে সাংবাদিক, তোদের ধিক ধিক ধিক’ লেখা লাল ব্যানার টানিয়ে তাদের অবস্থান জানান।
এই আচরণে চরম বিব্রত ও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন স্থানীয় সাংবাদিকরা। খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাবের সভাপতি তরুণ কুমার ভট্টাচার্য্য এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, “পার্বত্য অঞ্চলের গণমাধ্যমকর্মীরা সবসময়ই সব সম্প্রদায়ের উৎসব-আনন্দ, দুঃখ-দুর্দশার সময়ে পাশে থেকেছেন। সাংবাদিকদের সঙ্গে এমন আচরণ অনভিপ্রেত, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে বিভ্রান্তি ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির একটি অপচেষ্টা।”
অন্যদিকে, খাগড়াছড়িতে উৎসবমুখর পরিবেশে চলছে ‘বৈসাবি’ উৎসব। ১২ এপ্রিল (২৯ চৈত্র) সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে চাকমা সম্প্রদায়ের মানুষ চেঙ্গী ও মাইনী নদীতে ফুল ভাসিয়ে শুরু করেন বিজুর মূল আনুষ্ঠানিকতা, যা ‘ফুল বিজু’ নামে পরিচিত। ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে তরুণ-তরুণীরা নদীর তীরে জড়ো হয়ে বন থেকে আনা বিজু, মাধবীলতা, রঙ্গনসহ নানা রঙের ফুল গঙ্গা দেবী ও উপগুপ্ত বুদ্ধের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করেন। পরে শান্তি ও কল্যাণের প্রার্থনা করা হয়।
পুরনো বছরের ক্লান্তি ও দুঃখ ভুলে নতুন বছরের মঙ্গল কামনায় পাহাড়জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে উৎসবের আমেজ, যদিও সাংবাদিকদের প্রতি কিছু অংশের এমন আচরণ উৎসবের আনন্দে কালো ছায়া ফেলেছে।