ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে পহেলা বৈশাখের ‘আনন্দ শোভাযাত্রা’র জন্য তৈরি করা ফ্যাসিস্টের মুখাকৃতি ও শান্তির প্রতীক পায়রা আগুনে পুড়ে গেছে। শনিবার (১২ এপ্রিল) ভোররাতে এই ঘটনাটি ঘটে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদ জানান, “আমাদের প্রাথমিক ধারণা, ভোর ৪টা ৪৫ থেকে ৫টার মধ্যে আগুন লাগে। তবে এটি দুর্ঘটনা নাকি নাশকতা—তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তদন্ত চলছে।”
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, আগুনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফ্যাসিস্ট মুখ ও শান্তির পায়রার মোটিভ। এই মোটিভগুলো এবারের শোভাযাত্রার মূল থিমের প্রতীকী উপস্থাপন হিসেবে তৈরি করা হচ্ছিল।
গত বছর জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের চেতনায় এবারের বাংলা নববর্ষের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে — “নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান”। সেই থিমের অংশ হিসেবেই ফ্যাসিবাদবিরোধী চিত্র ও ভাস্কর্য তৈরি করছিলেন চারুকলার শিক্ষার্থী ও শিল্পীরা।
চারুকলার শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, আগুনে শোভাযাত্রার প্রস্তুতিতে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটলেও কাজ থেমে থাকবে না। এক শিক্ষার্থী বলেন, “এই শোভাযাত্রা শুধু আনন্দ নয়, এটি আমাদের প্রতিবাদের ভাষা। কেউ চাইলেও এই বার্তা থামাতে পারবে না।”
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, অগ্নিকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে এবং প্রয়োজনে সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পহেলা বৈশাখের এই শোভাযাত্রা বাংলাদেশের জাতীয় ঐতিহ্যের অংশ এবং ২০১৬ সালে ইউনেস্কো একে ‘ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজ’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এই শোভাযাত্রা প্রতিবছর ঢাকা শহরের বুকে একটি রঙিন প্রতিবাদ ও সাংস্কৃতিক ঐক্যের প্রতীক হয়ে ওঠে।