চট্টগ্রাম নগরের ডবলমুরিং থানার মিস্ত্রিপাড়া এলাকায় ইফতার সামগ্রী বিতরণকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে ছুরিকাঘাতে অন্তত ছয়জন আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) বিকেল ৫টার দিকে সীমা গার্মেন্টস সংলগ্ন মুন্সি মিয়ার পুরান বাড়ি মাঠে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষে আহতরা হলেন—খুরশিদ আলম, রাকিব, মুরাদ, সোহেল, হাসান মুরাদ এবং জালাল।
এদের মধ্যে খুরশিদ ও রাকিব চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম চৌধুরী সাজ্জাদ গ্রুপের অনুসারী। অন্যদিকে, আহত বাকিরা চট্টগ্রাম সিটি মেয়র ও বিএনপি নেতা ডা. শাহাদাত হোসেনের অনুসারী বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, জিয়া মঞ্চ ডবলমুরিং থানা কমিটির উদ্যোগে মিস্ত্রিপাড়া এলাকায় ইফতার সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। বিএনপির একাংশ অভিযোগ করে, ওই বিতরণ কার্যক্রমে আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জড়িত ছিল। এই অভিযোগকে কেন্দ্র করেই দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ড শ্রমিকদলের সাবেক সভাপতি মো. ইউনূস বলেন, “জিয়া মঞ্চের পক্ষ থেকে ইফতার বিতরণ করা হচ্ছিল। আমরা সেখানে সকাল থেকেই উপস্থিত ছিলাম। কিন্তু দেলোয়ার ও তার অনুসারীরা আওয়ামী লীগের লোকজনকে নিয়ে ইফতার বিতরণ করছিল। আমি এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে খুরশিদ ভাইকে ছুরিকাঘাত করে। রাকিবও আহত হয়।”
তিনি আরও জানান, ইফতারের জন্য রান্না করা বিরিয়ানি বিতরণের আগে তা রাস্তায় ফেলে দেওয়া হয় এবং দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
অন্যদিকে, জিয়া মঞ্চ ডবলমুরিং থানা কমিটির আহ্বায়ক মো. দেলোয়ার দাবি করেন, তাদের কর্মসূচিতে পরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো হয়েছে “কেন্দ্রীয় নির্দেশনায় আমরা ৩০০ মানুষের জন্য ইফতার সামগ্রী বিতরণ করছিলাম। এ সময় খুরশিদ, রাকিব, ইউনুস ও সেলিমরা এসে আমাদের নেত্রীর ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে এবং আমাদের ছেলেদের ওপর হামলা চালায়। তারা লাঠিসোঁটা, হকিস্টিক ও ছুরি নিয়ে আসে।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের ৩০০ প্যাকেট বিরিয়ানি রাস্তায় ফেলে দেওয়া হয়েছে এবং যারা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেছে, তাদেরও সেখানে হামলার শিকার হতে হয়েছে।”
ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী রফিকুল ইসলাম জানান, “ইফতার বিতরণকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে দুইজন ছুরিকাহত হয়েছেন। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সংঘর্ষের ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।