ঢাকাবুধবার, ২৬শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

দৈনিক ৪০০-৫০০ গাড়ির শহীদ ওয়াসিম আকরাম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে টোল ফাঁকি

নিউজ ডেস্ক | সিটিজি পোস্ট
মার্চ ২৫, ২০২৫ ২:৫২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

চট্টগ্রামের শহীদ ওয়াসিম আকরাম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে প্রতিদিন গড়ে ৪০০-৫০০ যানবাহন টোল পরিশোধ না করেই চলাচল করছে, ফলে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) লক্ষাধিক টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে। সিডিএ’র অভিযোগ, বিমানবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এবং সিটি কর্পোরেশনসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের অনেক গাড়ি নিয়মিত এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করলেও টোল পরিশোধ করছে না।

সিডিএ’র পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২১ মার্চ এক্সপ্রেসওয়েতে মোট ৫,৬৭২টি গাড়ি চলাচল করেছে, যার মধ্যে ৩৭৯টি গাড়ি টোল পরিশোধ না করায় সিডিএ ২৭,৩১৩ টাকা রাজস্ব হারিয়েছে। ওই দিন মোট রাজস্ব আয় ছিল ৪,০৮,৭৭০ টাকা। পরদিন, ২২ মার্চ, এক্সপ্রেসওয়েতে চলাচলকারী ৬,৭৬৩টি গাড়ির মধ্যে ৪৯১টি গাড়ি টোল পরিশোধ করেনি, ফলে ৩৮,১৪২ টাকা রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে। এই হার ধরে মাসিক রাজস্ব ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে ৮-১১ লাখ টাকা এবং বছরে প্রায় কয়েক কোটি টাকা।

এ বিষয়ে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প পরিচালক ও সিডিএ’র নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহফুজুর রহমান জানান, সরকারি ও রাষ্ট্রীয় সংস্থার গাড়িগুলো নিয়মিত টোল ফাঁকি দিচ্ছে, কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। অথচ প্রকল্পের ঋণ পরিশোধের দায় সিডিএ’র ওপর বর্তাচ্ছে। সিডিএ’র সিস্টেম অ্যানালাইজার মো. মোস্তফা জামাল এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “এক কোটি টাকার গাড়ি নিয়ে চলাচল করেন, কিন্তু ৮০ টাকা টোল দিতে চান না। পরিচিতজনদের ফোন করে টোল মওকুফের তদবির করেন। এটি দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ।”

উল্লেখ্য, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩ থেকে এক্সপ্রেসওয়েতে আনুষ্ঠানিকভাবে টোল আদায় শুরু হয়। সিডিএ’র সুপারিশের ভিত্তিতে ২৭ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় নতুন টোল হার নির্ধারণ করে। নতুন হার অনুযায়ী, সিএনজিচালিত অটোরিকশার জন্য ৩০ টাকা, কারের জন্য ৮০ টাকা, জিপ ও মাইক্রোবাসের জন্য ১০০ টাকা, পিকআপের জন্য ১৫০ টাকা, মিনিবাস ও চার চাকার ট্রাকের জন্য ২০০ টাকা, বাসের জন্য ২৮০ টাকা, ছয় চাকার ট্রাকের জন্য ৩০০ টাকা এবং কাভার্ড ভ্যানের জন্য ৪৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

শহীদ ওয়াসিম আকরাম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের টোল আদায়ে অনিয়মের কারণে সিডিএ প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে। বিশেষত, সরকারি ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের গাড়িগুলোর টোল ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতা উদ্বেগজনক। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে প্রকল্পের অর্থনৈতিক ভারসাম্য ব্যাহত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।