ঢাকাবুধবার, ২৬শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

এনসিপিতে অভ্যন্তরীণ অস্বস্তি : হাসনাত-সারজিস নিয়ে বিতর্ক !

নিউজ ডেস্ক | সিটিজি পোস্ট
মার্চ ২৪, ২০২৫ ২:২৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে বৈঠক সংক্রান্ত ফেসবুক পোস্ট নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) অভ্যন্তরে তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। দলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলমের পৃথক পোস্টকে কেন্দ্র করে দলীয় নেতাদের মধ্যে বিভক্তি দেখা দিয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার রাতে হাসনাত আবদুল্লাহ তার ফেসবুক পোস্টে দাবি করেন, ১১ মার্চ তাঁকে ও অপর এক নেতাকে সেনানিবাসে ডেকে নিয়ে আওয়ামী লীগের ‘পুনর্বাসন’ বিষয়ে আলোচনা করা হয়। তার এই পোস্ট রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি করে।

এর দু’দিন পর, রোববার, আরেক নেতা সারজিস আলম ভিন্নমত পোষণ করে ফেসবুকে লেখেন, ‘‘যেভাবে কথাগুলো স্ট্যাটাসের মাধ্যমে এসেছে, তা সমীচীন হয়নি। এতে ভবিষ্যতে দলের গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার বিশ্বাসযোগ্যতা সংকটে পড়তে পারে।’’ তিনি আরও লেখেন, ‘‘যে টোনে হাসনাতের পোস্ট দেওয়া হয়েছে, সেটি আসল বৈঠকের ভাষ্যের চেয়ে অনেক বেশি এক্সট্রিম বলে মনে হয়েছে।’’

সারজিসের এই মন্তব্যের পরপরই এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ মন্তব্য করেন, ‘‘এসব কী ভাই! পাবলিকলিই বলছি, দুজনের একজন মিথ্যা বলছেন। এটা চলতে পারে না।’’

এর আগে, ২২ মার্চ সিলেটে এক অনুষ্ঠানে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী হাসনাতের ফেসবুক পোস্টকে ‘‘শিষ্টাচারবর্জিত’’ বলে মন্তব্য করেন।

এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির একাধিক নেতা জানান, এই ঘটনা নিয়ে দলের অভ্যন্তরীণ হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। দলের নীতিনির্ধারকরা বলছেন, ‘‘কোনো আলোচনা দলীয় ফোরামে না এনে এককভাবে প্রকাশ করা সাংগঠনিক শৃঙ্খলার পরিপন্থী।’’

এক নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘‘গুটিকয়েক ব্যক্তি ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তা অর্জনের জন্য যা ইচ্ছা বলছেন। যদি কন্ট্রোভার্সি আর পপুলারিটি দিয়ে রাজনীতি করতে হয়, তাহলে আমাদের পার্টি থেকে বাদ দিয়ে টিকটকারদের এনে বসিয়ে দিন!’’

সেনা সদর হাসনাতের পোস্টকে ‘‘সম্পূর্ণ রাজনৈতিক স্টান্টবাজি’’ বলে অভিহিত করেছে বলে সুইডেনভিত্তিক নেত্র নিউজের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। সেনা সদর আরও বলেছে, ‘‘এটি অত্যন্ত হাস্যকর ও অপরিপক্ব গল্পের সম্ভার।’’

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এনসিপির ভেতরে বিভক্তির আভাস স্পষ্ট হয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, দলীয় ফোরামে আলোচনা না করে সামাজিক মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় প্রকাশ করা অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। এটি দলের দীর্ঘমেয়াদী স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে বলে মত দিচ্ছেন অনেকে।

তবে কেন্দ্রীয় নেতাদের একটি অংশ শিগগিরই বিষয়টি নিয়ে বৈঠকে বসতে পারেন বলে জানা গেছে।