ঢাকামঙ্গলবার, ২৫শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

সাফ চ্যাম্পিয়ন ঋতুপর্ণার জমিতে বসতঘর নির্মাণে বাধা : প্রশাসনের আশ্বাস, তবুও উদ্বেগ

নিউজ ডেস্ক | সিটিজি পোস্ট
মার্চ ২৩, ২০২৫ ৭:৪০ অপরাহ্ণ
Link Copied!

২০২২ ও ২০২৪ সালে টানা দুবার সাফ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ী বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের মিডফিল্ডার ঋতুপর্ণা চাকমাকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়। তবে এই জমিতে বসতঘর নির্মাণে বাধার মুখে পড়েছেন তিনি। শনিবার (২৩ মার্চ) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি দীর্ঘ স্ট্যাটাসে তিনি এই বিষয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করেন।

ঋতুপর্ণা তার ফেসবুক পোস্টে লিখেন, “ঘরহীন ছিলাম। এক টুকরো সরকারি জমি পেলাম, তাও কিছু মানুষ তা দখল করে নিলো। এখন আমার অনুশোচনা হচ্ছে, ২০১৭ সাল থেকে আমি দেশের জন্য খেলছি, দেশের প্রতিনিধিত্ব করছি, নিজে জেলার মানুষের কাছে মূল্যায়নটা পাইলাম কই?”

ঋতুপর্ণার অভিযোগ, ২০২২ সালে প্রশাসন তাকে বাড়ি ও বাড়ি যাওয়ার রাস্তা করার আশ্বাস দিয়েছিল। কিন্তু বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের বদলির কারণে সেই আশ্বাস বাস্তবায়িত হয়নি। ২০২৪ সালে সাফ জয়ী হওয়ার পর রাঙামাটিতে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি তার সমস্যার কথা আবারও তুলে ধরেন। এরপর গত কয়েকদিন আগে কাউখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তাকে ঘাগড়া বাজারের পাশে একটি জমি দেখান এবং সেখানে বসতঘর নির্মাণের অনুমতি দেওয়া হয়।

তবে জমি বরাদ্দের পরপরই ঋতুপর্ণাকে হুমকি দেওয়া হয়। তিনি বলেন, “পরদিন আমি বাড়িতে এলে আমাকে বলা হলো, সেই জায়গাটা নাকি ৭০ জনের একটি কমিটির দখলে। তারা বলেছে, জায়গাটা নিলে আমি বিতর্কিত হবো। যদিও তারা কোন কমিটির এবং তারা কে, তা আমি জানি না। বিষয়টি আমি ইউএনও এবং এডিসিকে জানিয়েছি। তারা বিষয়টি দেখবেন বলে আমাকে আশ্বাস দিয়েছেন।”

এ বিষয়ে কাউখালী উপজেলা ইউএনও কাজী আতিকুর রহমান বলেন, “বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। গত কয়েকদিন আগে আমি ঋতুপর্ণাসহ জায়গাটি দেখে এসেছি। শুক্রবার বিকেলে শুনেছি, কেউ একজন ঋতুপর্ণাকে ফোন করে বলেছে, জায়গাটা তারা একজনের কাছ থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকায় কিনে নিয়েছে। এখন ঋতুপর্ণা যদি সাত লাখ টাকা দেয়, তাহলে জায়গাটা পাবে। না হলে সেখানে ঘর নির্মাণ করতে দেওয়া হবে না। এটি শুনে আমি আশ্চর্য হয়েছি, কারণ এটি একটি খাস জমি। এখানে দখলদারিত্বের কোনো সুযোগ নেই। আমরা বিষয়টি দেখছি এবং ঋতুপর্ণাকে আশ্বস্ত করেছি।”

রাঙামাটির অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ রুহুল আমীন বলেন, “ঋতুপর্ণা চাকমার ফেসবুক পোস্টটি আমাদের নজরে এসেছে। আমরা সরকারি জায়গা সরকারি টাকায় বরাদ্দ দিয়েছি। আমরা তাকে ঘর তুলে দেব। এখানে অন্য কারও সুযোগ নেই কিছু করার। যারা বাধা দিচ্ছে, তাদের বিষয়ে আমরা খোঁজখবর নেব এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।”

ঋতুপর্ণার জন্ম রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের দুর্গম মগাছড়ি গ্রামে। গ্রামের বাড়ি মগাছড়িতে হলেও তার যাতায়াতের সুবিধার্থে উপজেলার ঘাগড়া বাজারের পাশেই সরকারি খাস জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়।

ঋতুপর্ণার এই ঘটনায় স্থানীয় জনগণ ও ফুটবল ভক্তরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন, যাতে দেশের জন্য গৌরব বয়ে আনা এই খেলোয়াড়ের সমস্যা দ্রুত সমাধান হয়।